আজ ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: চন্দনাইশে শুক্লাম্বর দীঘি মেলা

চন্দনাইশে শুক্লাম্বর দীঘি মেলায় হাজারও পূর্ণার্থী


মুহাম্মদ আরফাত হোসেন, চন্দনাইশঃ উপজেলার বরমা ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী শুক্লাম্বর দীঘি মেলায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে অংশ নিয়েছে হাজারও সনাতন ধর্মালম্বী। প্রতিবছরের মতো ১৫ জানুয়ারি (সোমবার) পৌষ সংক্রান্তিতে মাঘ মাসের প্রথম দিন বসেছিলো এ মেলা।

বরমা বাইনজুরী গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী শুক্লাম্বর দীঘিটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য তীর্থ হিসাবে পরিচিত। যার যার মনোবাসনা পূরণ করতে প্রতিবছর শুক্লাম্বর দিঘির পাড়ে আসেন পুণ্যার্থীরা। যে যার সাধ্যমতো এখানে প্রাণী, দুগ্ধ স্বর্ণালংকার দান ও প্রসাদ বিতরণ করে থাকেন। এ দীঘিতে ধর্মমতে মানত (মনোবাসনা) করলে তা পূরণ হয় বলে তাদের ধারণা। প্রতিবছর ১ মাঘ এ দিঘিকে কেন্দ্র করে বসে বিশাল মেলা। সে মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল, ভুটান থেকে আসে সনাতনী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ। এজন্য মেলার দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুণ্যার্থীদের ঢল নামে।

জানা গেছে, ষোড়শ শতকের প্রথম দিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের নদীয়া থেকে চন্দনাইশে ধর্ম প্রচারের এসেছিলেন শ্রী শুক্লাম্বর ভট্টাচার্য। তারই নামে এ মেলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রয়াত নিত্যানন্দ বৈলয়। শুক্লাম্বর দীঘিকে কেন্দ্র করে পৌষ সংক্রান্তিতে এ মেলা দীঘির পাড়ে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মেলা ছাড়াও প্রতিদিন কেউ না কেউ এ পীঠমন্দিরে তাদের মানত নিয়ে আসতে দেখা যায়। তবে সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এর সংখ্যা বেশি থাকে।

আরও পড়ুন চন্দনাইশ শুক্লাম্বর দীঘির প্রাচীন মেলা সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে

শুক্লাম্বর ভট্টাচার্য এ দীঘির পাড়ে বসে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। দীর্ঘদিন ধ্যান মগ্নে থাকার পর ২ শতাধিক বছর পূর্বে তিনি ইহ জগত ত্যাগ করলে, তাকে এ দিঘির পাড়ে সমাহিত করা হয়। তার সমাহিত স্থানে একটি অশ্বথ বৃক্ষ বিশাল জায়গা জুড়ে স্মৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। পূজারীরা এ অশ্বথ বৃক্ষের ডালে মনোবাসনা পূরণের আশায় সুতা বাঁধে এবং কবুতর ছেড়ে দেয়। মন্দিরের জন্য মানত করে শত শত ছাগল বলী দেয়া হয়। বিভিন্ন পূজনীয় দান মন্দিরে উৎসর্গ করেন মেলায় আসা পূজারীরা। তাছাড়া দীঘীতে মেলার দিনসহ বিভিন্ন সময়ে গাভীর দুধ ঢেলে দেয়, স্নান করে তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য। ধর্মমত অনুযায়ী, পূণ্যার্থীরা দীঘিতে স্নানের মাধ্যমে নিজেদের পরিশুদ্ধ করেন।

চলতি বছর মেলা পরিচালনায় ছিলেন, চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ ওবাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক বরমা ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম টিটু, আওয়ামী লীগ নেতা আহসান ফারুক, মধু সুধন দত্ত, এড. রতন কুমার সেন, ডা. বিধান চন্দ্র ধর, ডা. কাজল বৈদ্য, মেম্বার নওশা মিয়া, শওকত হোসেন টিপু, কৃষ্ণ চক্রবর্তী, আনিসুর রহমান, দিলীপ ভট্টাচায্য জয়দেব গাঙ্গুলি, অশোক দত্ত, বিধান দেব, হারাধন ধর, নৃপতি দত্ত প্রমুখ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর