আজ ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রামে ইটভাটা পরিচালনায় কড়া নির্দেশনা জেলা প্রশাসকের


অনলাইন ডেস্কঃ চট্টগ্রামে ইটভাটা পরিচালনা করতে হলে মালিকপক্ষকে আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ অনুসরণ ও পোড়ানো ইটের পরিবর্তে ব্লক ব্যবহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় সভায় ইটভাটা মালিক-সমিতির নেতাদের এ নির্দেশনা দেন তিনি।

তিনি বলেন, চলতি বছরেই চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ২৫ শতাংশ ভাটায় পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট তৈরি নিশ্চিত করতে হবে। ম্যানুয়ালি ও অটো পদ্ধতির পাশাপাশি ব্লক ইট তৈরি করলে অন্য ইটভাটার মতো পরিবেশ দূষণ করবে না।’

তিনি বলেন, ‘বায়ু দুষণ রোধসহ পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট তৈরির কোনো বিকল্প নেই। যাদের একাধিক ইটভাটা রয়েছে চলতি বছরের মধ্যেই তাদের কমপক্ষে ২৫ শতাংশ ভাটায় ব্লক ইট তৈরি করে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ইট তৈরির কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিতে হবে। কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধি ও আশানুরূপ ফসল ফলানোর লক্ষ্যে টপসয়েল কর্তন থেকে বিরত থাকতে হবে। এ বিষয়ে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা মানতে হবে এবং বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে ব্লক ইট তৈরির বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে হবে।’

জেলা প্রশাসক বলেন, নতুন করে আর কোনো ইটভাটার লাইসেন্স দেওয়া হবে না। যেগুলো আছে সেগুলো থেকে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে এনে পরিবেশবান্ধব ইটভাটাগুলো রাখা হবে। চাহিদা থাকলে ব্লক ইটের সরবরাহ বাড়বে। প্রকৃত ও বৈধ ইটভাটা মালিকরা যাতে কোনো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সে লক্ষ্যে গণপূর্ত, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল, সড়ক ও জনপথ (সওজ), শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকৌশলসহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান ও দপ্তর এবং সিপিডিএল ও স্যানমারসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ব্লক ইটের চাহিদাপত্র নিয়ে ইটভাটা মালিক পক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

সভাসূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বাস্তবায়নে আগামী মাসে চট্টগ্রামে একটি সভা আহ্বান করা হবে। সভাটিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর উপস্থিত থাকার পাশাপাশি চসিক মেয়র, সিডিএ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও জেলা-উপজেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন।

আরও পড়ুন নির্বাচনী আচরণবিধি মানার আহ্বান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের

ইটভাটা মালিকদের প্রশ্নের জবাবে বালি সরবরাহ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীসহ রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও অন্যান্য এলাকার বিভিন্ন ছোট-বড় খালে বালির অভাব নেই। এখনো যে পরিমাণ বালি আছে তাতে আগামী ৫ বছরেও আশা করি কোনো সমস্যা হবে না, আপনারা আবেদন করেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে বালির ব্যবস্থা হবে।’

সভায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, ‘ব্লক ইট তৈরির ছাড়পত্রের জন্য ইটভাটা মালিকগণ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়ে আবেদন করলে তা শুনানি শেষে দ্রুততার সাথে দেওয়া হবে। কোনো ধরনের বেগ পেতে হবে না। ছাড়পত্র পেলে বিদ্যুৎ সংযোগও দ্রুত সময়ে পাওয়া যাবে।’ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় চট্টগ্রাম জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ও রাউজান পৌরসভার মেয়র মো. জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, ‘দূষণবিহীন ইটভাটায় ব্লক ইট তৈরি করতে গিয়ে মালিক পক্ষ যাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে সরকারের নজরদারি প্রয়োজন। পরিবেশ দুষণ করে আমরা কেউ ইট তৈরি করতে চাই না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনেই পরিবেশবান্ধব ইট তৈরি করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

তিনি আরো বলেন, ‘নদীগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এগুলোতে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালি উত্তোলন করা যাবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করতে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।’

সিনিয়র সহকারী কমিশনার রাজীব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবদুল মালেক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) একেএম গোলাম মোর্শেদ খান, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ও রাউজান পৌরসভার মেয়র মো. জমির উদ্দিন পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারসহ বিভিন্ন উপজেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকেরা।

তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ২৪ডটকম


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর