সম্পাদকীয়ঃ ১৩৮ বছর কেটে গেছে, সবাই কেবল দিবসটি এলে একদিনের ছুটি কাটিয়ে উদযাপন করে; আর পরে সব ভুলে যায়। ভুলে যায় বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেওয়ার ইতিহাস। ভুলে যায় সেইসব মহান মানুষের আত্মাহুতির কারণ। সেদিন আমেরিকাতে কেবল তারা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেননি চেয়েছেন সারাবিশ্বের শ্রমিকেরা আদায় করে নিক তাদের ন্যায্য অধিকার।
১৮৮৬ সালের ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন অসংখ্য শ্রমিক। শিকাগোর শ্রমিক আন্দোলনের মহান নেতা পারসন্স ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘আমাদের প্রাণ উৎসর্গ করছি পৃথিবীর সব মানুষের দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য।’
ওইদিন তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী শ্রমিকশ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। কিন্তু এ কথা মিথ্যে নয় উপরে উপরে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা বলা হলেও পৃথিবীর অসংখ্য দেশে এখনও শ্রমিকরা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত। এক্ষেত্রে মানা হয় না আন্তর্জাতিক লেবার অর্গানাইজেশনের (আইএলও) বিধিমালা। গ্রাহ্য হয়না শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি। বাংলাদেশে এটি আরো প্রকট।
আরও পড়ুন মহান মে দিবসে চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত
এদেশে অধিকাংশ সেক্টরে শ্রমিকেরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত, অনেকে জানেনও না মালিকপক্ষের কাছে তাদের কী অধিকার রয়েছে? এদেশে এ সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন যেমন রয়েছে তেমনি তাদের উদাসীনতা সকল প্রান্তে দৃশ্যমান। তবু মে দিবস এলে মূল চেতনাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের কথা বলেন। মিছিল করেন মিটিং করেন। সারাবিশ্বের মতো ঢাকঢোল পিটিয়ে বাংলাদেশেও মে দিবস পালন করা হয়। অন্যভাবে বলা যায় উদযাপন করা হয়।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের শতাধিক দেশে পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়। ভুলে গেলে চলবে না মে দিবস শুধু নিজের অধিকার আদায় বা প্রাপ্তির দিন নয় এর তাৎপর্য মহান। দিবসটি হোক শ্রমিকদের বুঝতে পারার দিন, দিবসটি হোক শ্রমিকদের সম্মান প্রদর্শনের দিন।
Leave a Reply