আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংকগুলোর প্রতি ভরসা কমছে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের


অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংকগুলোর প্রতি ভরসা কমছে প্রবাসে অবস্থানকারী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের। চার বছর আগেও দেশের রেমিট্যান্স বাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ ছিলো এক-চতুর্থাংশের বেশি। সে বাজার হাতছাড়া হতে হতে এখন ১০ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে। সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহের অবস্থা একেবারেই নাজুক। তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে কেবল জনতা ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গত পাঁচ বছরের রেমিট্যান্স প্রবাহের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২০ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিলো ৫৫৮ কোটি ৮২ লাখ ডলার, যা ছিলো মোট রেমিট্যান্সের ২৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। এরপর থেকে এ অংশীদারত্ব ক্রমেই কমেছে। ২০২১ সালে ২২ দশমিক শূন্য ৩,  ২০২২ সালে ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ রেমিট্যান্স দেশে আনে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক। ২০২৩ সালে এ অংশীদারত্ব মাত্র ১২ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে আসে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে রেমিট্যান্সের মাত্র ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এসব ব্যাংকের মাধ্যমে।

ডলারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত দরে রেমিট্যান্স আনতে গিয়ে এ বিপর্যয় ঘটেছে বলে দাবি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের অভাবেই ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সের বাজারে তাদের অবস্থান হারিয়েছে।

আরও পড়ুন রেমিট্যান্সে আবারো রেকর্ড চট্টগ্রামের

বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তার বক্তব্য হলো- রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মকর্তারা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ঘোষিত দরে ডলার পাওয়ার আশায় বসে ছিলেন। এ কারণে তারা রেমিট্যান্সের বাজার হারিয়েছেন। রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রতিযোগী মনোভাবের ছিটেফোঁটাও ছিলো না।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর শাখা সারাদেশে বিস্তৃত। সেবার পরিধি ও মান বাড়ানোর নামে গত কয়েক বছর প্রযুক্তি খাতে শতশত কোটি টাকা ব্যয়ও করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ও প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সসহ অন্যান্য সেবা জনগণের দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারত। কিন্তু তা না করে উল্টো রেমিট্যান্সসহ ব্যবসা সংকুচিত হয়ে যাওয়াটি দুঃখজনক। এটি অব্যবস্থাপনারই ফল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১৭৪ কোটি বা ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এরপর ২০২১ সালে ২২ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ও ২০২২ সালে ২১ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। আর ২০২৩ সালে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২১ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ৮ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: বণিক বার্তা


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর