আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন


অনলাইন ডেস্কঃ ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর মগবাজারে সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনটি বলছে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া দর অসার, অর্থহীন ও কল্পনাপ্রসূত। যথেষ্ট যাচাই–বাছাই ও বিবেচনা ছাড়াই সরকারি সংস্থাটি দাম নির্ধারণ করেছে। সে জন্য তারা এই প্রজ্ঞাপন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে। তা না হলে ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না বলেও মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির নেতারা। এ ছাড়া তারা সাত দফা দাবিও উত্থাপন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে চরম অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। পণ্যের উৎপাদন ব্যয় ও আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি ও খুচরা মূল্য বেড়েছে।

অন্যদিকে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা আনুপাতিক হারে কমছে। এই দীর্ঘ দুর্যোগময় সময়ে ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শ্রেণির অনেকেই পুঁজি হারিয়ে সর্বস্বান্ত। যাঁরা টিকে আছেন, তাঁরাও অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পণ্য মূল্য বেঁধে দেওয়া অন্তর্ঘাতমূলক সিদ্ধান্ত। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের এ ধরনের কল্পনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের ফলে সরকার ও ব্যবসায়ী—উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও টিসিবির মূল্যতালিকা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাজারে ভয়াবহ পণ্য সংকট তৈরি হতে পারে। বিভিন্ন জেলা থেকে জানানো হয়েছে, খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করার সাহস পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র শ্রেণির ব্যবসায়ীরা আবারও ব্যবসা পরিচালনা করতে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হবেন।

আরও পড়ুন পতেংগা সী-বীচ দোকান মালিক সমিতির সেক্রেটারির সাথে জেওয়াই হজ কাফেলার মতবিনিময়

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় খুচরা পর্যায়ে ২৯টি পণ্য পবিত্র রমজান মাসে বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারে। প্রয়োজন হলে আমরা বিভিন্ন বাজারে জায়গার ব্যবস্থা করব।’ দাম বেঁধে দেওয়ার পরিবর্তে সরকার এ কাজ করলে বাজারে সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পণ্যের দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতিতে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন স্থগিত ছাড়াও দাবিগুলোর মধ্যে আছে—বিভিন্ন পণ্যের আমদানি ও উৎপাদনের সঠিক পরিসংখ্যান নিশ্চিত করা, টিসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধি, বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানো, নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংস্থার চাপমুক্ত অবস্থায় ব্যবসা করার সুযোগ নিশ্চিত করা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যে আরোপিত সব ধরনের কর ও ভ্যাট কমিয়ে সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা।

দাম বেঁধে দেওয়ার বিষয়টি কেন কল্পনাপ্রসূত এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার সুযোগ নেই, চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হবে। বাজার ঠিক করতে গেলে বিপণন অধিদপ্তর নিজেই বাজারে পণ্য বিক্রি করতে পারে। সেই সুযোগ তাদের আছে।

কিন্তু কারও সঙ্গে আলোচনা না করে এভাবে দাম বেঁধে দেওয়ার কারণে বাজারে পণ্যের সংকট হচ্ছে; অভিযান হচ্ছে খুচরা দোকানে। উৎপাদক পর্যায়ে তদারকি না বাড়িয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান জানান দোকান মালিক সমিতির নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব জহিরুল হক ভূঁইয়া, বিভিন্ন জেলা কমিটির নেতাসহ ঢাকার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যসূত্র: প্রথম আলো


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর