আজ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

নির্বাচনে গবেষণালব্ধ ফল জানালো টিআইবি


অনলাইন ডেস্কঃ সদ্যসমাপ্ত অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৫০টি আসনে নিবিড় পর্যবেক্ষণে গবেষণা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)। আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং’ এর তথ্য তুলে ধরেছে সংস্থাটি।

টিআইবির গবেষণায় নির্বাচন-পূর্ববর্তী ও নির্বাচনকালীন ঘটনাপ্রবাহ, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণসংক্রান্ত তথ্য এবং নির্বাচনের পরবর্তী এক মাস পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গত বছরের জুন থেকে এই গবেষণা শুরু হয়েছে। ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫০টি আসনে গবেষণা করা হয়।

টিআইবির প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থীরা নির্বাচন উপলক্ষ্যে গড়ে ৩ কোটি সাড়ে ৯ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। এর মধ্যে একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। তাঁদের ব্যয়ের পরিমাণ নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ব্যয়সীমার গড়ে সাড়ে ১১ গুণ বেশি। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, নির্বাচনী ব্যয়সীমা লঙ্ঘনের ধারা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীরা ব্যয়সীমার ৩ গুণ বেশি খরচ করেছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতা অব্যাহত রাখার কৌশল বাস্তবায়নে একতরফা নির্বাচন সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের আইনগত বৈধতা নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ হয়তো হবে না বা হলেও টিকবে না। তবে এ সাফল্য রাজনৈতিক শুদ্ধাচার, গণতান্ত্রিক ও নৈতিকতার মানদণ্ডে চিরকাল প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিতের যে পূর্বশর্ত থাকে, তা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিপালিত হয়নি।

আরও পড়ুন টিআইবি পুরস্কার ২০২৩: ৩ সাংবাদিক ও ১ গণমাধ্যমের সম্মাননা

টিআইবি আরও বলেছে, নির্বাচন কমিশন একতরফা নির্বাচনের ‘অ্যাজেন্ডা’ বাস্তবায়নের অন্যতম অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে। অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসন অনুরূপভাবে একই ‘অ্যাজেন্ডা’র সহায়ক ভূমিকায় ব্যবহৃত হয়েছে।

টিআইবি মনে করছে, সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের সম্ভাব্য সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে যতটুকু আগ্রহ থাকবে, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হবে শুদ্ধাচার ও নৈতিকতার মানদণ্ডে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন এবং তার প্রভাব। দেশের গণতান্ত্রিক ও নির্বাচনী ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ক্রমাগত গভীরতর হবে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকার যে কাজই করুক, সবকিছুর মধ্যে জবাবদিহি অনুপস্থিত থাকার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সরকারের একক সিদ্ধান্তে পরিচালিত শাসনব্যবস্থা হবে, সেখানে জনগণের স্বার্থের প্রতিফলন কতটা হবে, সেটা দেখার বিষয়। জবাবদিহিপূর্ণ, সুশাসিত, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নের সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা দলের সদস্য মাহফুজুল হক, নেওয়াজুল মওলা ও সাজেদুল ইসলাম। তাতে বলা হয়, গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত আসনগুলোতে তফসিল ঘোষণার আগে থেকে নির্বাচন পর্যন্ত নির্ধারিত ব্যয়সীমার বেশি ব্যয় করেছেন প্রায় ৬৬ শতাংশ প্রার্থী। সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, একজন প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা।

তথ্যসূত্র: প্রথম আলো


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর