আজ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: চকরিয়ার গোলাপ ফুল চাষ।

দেশি ফুলে সমৃদ্ধ হতে পারে অর্থনীতি


#বৈশ্বিক বাজার ৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
#রপ্তানিতে আয় হতে পারে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার
#চট্টগ্রামে বাজার ৩২০ কোটি টাকার
#চাষে অন্যতম চন্দনাইশ (খাগরিয়া, বাগিচাহাট), চকরিয়া, হাটহাজারী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামে দেশে উৎপাদিত ও বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ফুলের বাজার প্রায় তিনশ’ বিশ কোটি টাকার।সারাদেশে এই বাজার ১৬শ’ কোটি টাকার বেশি।

একটা সময় ছিলো যখন চট্টগ্রামে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ হতো না কিন্তু বর্তমানে ফুলের চাহিদা ও বাজারের আকার বড় হওয়ায় এ অঞ্চলে ফুল চাষ বেড়েছে।চন্দনাইশ (খাগরিয়া, বাগিচাহাট) চকরিয়া, হাটহাজারীসহ বেশ কয়েকটি স্থানে এখন ফুলের চাষ হচ্ছে। খাগরিয়াতে গোলাপ, ইন্ডিয়ান গাঁদা, জিপসি, বেলি, গ্লাডিওলাস, আলমুন্ডু (স্বর্ণকুঠি), চন্দ্রমল্লিকা, চায়না গাঁদাসহ ৮ থেকে ১০ ধরনের ফুল চাষ হয়। শীতকালীন মৌসুমে প্রায় ২শ’ কানি (২০ গন্ডা) জমিতে চাষ হওয়া ফুল দৈনিক নিম্ন্নে ১ লাখ টাকা করে ৬ মাস বিক্রি হয় খাগরিয়ায়।বাকি ছয় মাসও দৈনিক বিক্রি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার বেশি। সে হিসেবে বর্তমানে প্রায় তিন কোটি টাকার বাজার দাঁড়িয়েছে ইউনিয়নটিতে। নীচু এলাকা হওয়ার কারণে ওই অঞ্চলে গোলাপ চাষ ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন খাগরিয়ার ফুল চাষী মো. মহিউদ্দিন। চাটগাঁর সংবাদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন,‘সরকারি- বেসরকারি সহায়তা পেলে খাগরিয়ার ফুল চাষ রপ্তানিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’বর্তমানে খাগরিয়া থেকে অনেকে বান্দরবানে গিয়ে ফুল চাষ শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।

ছবি: মো.
বাম দিক থেকে মোজাম্মেল হক মিঠু যুগ্ম সা. সম্পাদক (বিএফএস, চট্টগ্রাম), বাচ্চু খা সাবেক সহসভাপতি (বিএফএস, ঢাকা)। নাসির গনি সাবেক সিনিয়ার (সহ-সভাপতি বিএফএস, ঢাকা)। মোহাম্মদ আশরাফুল আলম প্রজেক্ট ডাইরেক্টর কৃষি মন্ত্রণালয়।মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (সমাজ কল্যাণ সম্পাদক বিএফএসএস, ঢাকা)।

চকরিয়াতে ১শ’ একর জমিতে চাষ হয় গোলাপ এবং ৫০ একরে গ্লাডিউলাস।এ অঞ্চলের একটা বাগান থেকেই প্রতিদিন ২৫ থেকে ৫০ হাজার গোলাপ উঠে।বাজার দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটির। এ প্রসঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক মিঠু বলেন, ‘চট্টগ্রামে যে পরিমাণ ফুলের চাহিদা ও বাজার রয়েছে তার খুব অল্প পরিমাণই এ অঞ্চলে উৎপাদন হয়। তাছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চাষীদের অনেকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চাষ থেকে বিমুখ হয়ে পড়েন। নীতি নির্ধারকদের সহায়তা পেলে চট্টগ্রামে উৎপাদিত ফুল অভ্যন্তরীন চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব হতো।’ তিনি বলেন, ‘সারাদেশে প্রায় ১৬শ’ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়। এর ২০ শতাংশের বাজার রয়েছে চট্টগ্রামে।সে হিসেবে চট্টগ্রামে বছরে ৩২০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়।’

তবে ফুল চাষে জমি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যদি ভুল হয় সেক্ষেত্রে লোকসানের আশংকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায়। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে যখনই কেউ আমাদের কাছে পরামর্শ চেয়েছে আমরা বলেছি, শীতকাল হলো ফুল চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়।এক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের ক্ষতি এড়াতে অবশ্যই এ চাষ উঁচু জমিতে করতে হবে।’ চলতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যেসব ফুল চাষী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন অন্যান্য ফসলের তুলনায় সেটির পরিমাণ কম ছিলো বলে আলাদাভাবে কাউন্ট হয়নি, বিবিধ ক্ষতিতে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ফুলচাষ ও রপ্তানী বৃদ্ধিতে বিশেষ নজর দিয়েছে সরকার। সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক দেশি ফুলের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য বিজ্ঞানীদের সহায়তা চেয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি সামনে আরো বিকশিত হবে। সেখানে ফুল বিরাট ভূমিকা রাখতে পারবে। সেজন্য, ফুলের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং তার ব্যাপক সম্প্রসারণ করতে হবে।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর