আজ ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

বিসিএস কর্মকর্তারা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার: প্রধানমন্ত্রী


অনলাইন ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবীন বিসিএস কর্মকর্তাদের ‘৪১ এর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মূল সৈনিক’ আখ্যায়িত করে দেশের অব্যাহত ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ।

রবিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিসিএস কর্মকর্তাগণের ৭৫তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। সফলভাবে কোর্স সম্পন্নকারি ১৯টি ক্যাডার সার্ভিসের ৬০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ জন কৃতি শিক্ষার্থীর হাতে ‘মেধা সনদ’ তুলে দেন এবং তিনজনের মাঝে ‘মর্যাদা পদক’ বিতরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ৬ মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত ৭৫ তম বুনিয়দি প্রশিক্ষন কোর্সে তাহসিন বিনতে আনিস শীর্ষস্থান অর্জন করে রেক্টর’স পদক লাভ করেন।

তিনি বলেন, ‘আপনাদের (নতুন বিসিএস কর্মকর্তাদের) সজাগ থাকতে হবে যাতে দেশের প্রতিটি উন্নয়ন অব্যাহত ও টেকসই হয়, যার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে।’

তিনি অনুষ্ঠান থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন ৫টি প্রকল্প ও কর্মসূচির আওতায় নির্মিত ভবন এবং ‘গভর্ণমেন্ট এমপ্লয়মেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম-জিইএমএস’ সফটওয়্যার উদ্বোধন করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তার কোন চাওয়া পাওয়া নেই উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা বলেন, আমরা চাওয়া একটাই, একটাই স্বপ্ন, যেটা আমার বাবা এদেশের মানুষকে নিয়ে দেখেছিলেন। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা আর তাদের জীবন মান উন্নত করা। আজ পর্যন্ত যতটুকু করতে পেরেছি ভবিষ্যতের জন্য যেন সেটা স্থায়ী হয় চলমান থাকে, সেটাই আমার একমাত্র দাবি সবার কাছে।

তিনি বলেন, দিনরাত পরিশ্রম করে আজকে বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে এসেছি তার থেকে বাংলাদেশ যেন কিছুতেই পিছিয়ে না যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, কিছু সমস্যায় আমরা আছি। রিজার্ভ নিয়ে অনেকে কথা বলে – আমি বলছি রিজার্ভ নিয়ে অত চিন্তার কিছু নেই। আমার গোলায় যতক্ষন খাবার আছে ততক্ষণ আমরা চিন্তা করিনা।
দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনার জন্য তাঁর আহবান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ফসল ফলাবো নিজের খাবার নিজেরা খাব, কেনাকাটা বা খরচ না হয় আমরা একটু কমই করবো। কিন্তু আমার নিজের দেশের মর্যাদা নিয়ে আমাদের চলতে হবে।

তিনি বলেন, ৪১ এর বাংলাদেশের মূল কারিগর এবং সৈনিক হবেন আজকের কর্মকর্তারা। তখনতো আর আমরা থাকবোনা।কিন্তু দেশটা যেন এগিয়ে যায়। আমি শুধু সেটাই চাই।

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীও বক্তৃতা করেন। এছাড়া ৭৫ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারিদের পক্ষে চারজন শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’র (বিপিএটিসি) রেক্টর মো. আশরাফ উদ্দিন ৭৫ তম বুনিয়ানি প্রশিক্ষণ কোর্সের চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন এবং শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। অনুষ্ঠানে ৭৫ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স এবং প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলোর দুটি পৃথক ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
প্রকল্পগুলো হচ্ছে-সরকারি কর্মচারি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম (গভর্ণমেন্ট এমপ্লয়মেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম-জিইএমএস), ৫শ’ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি কর্মচারি হাসপাতাল, নবনির্মিত টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজ, নবনির্মিত কুমিল্লা সার্কিট হাউজ এবং বিপিএটিসির ১৫ তলা আধুনিক ডরমেটরি ভবন।

প্রধানমন্ত্রী সিভিল সার্ভিসের নবীন কর্মকর্তাদের দেশের প্রতি দায়িত্ব বোধ নিয়ে কাজ করার এবং এখানে লব্ধ প্রশিক্ষণকে দেশ ও জনগণের কাজে লাগানোর আহবান জানান।

তিনি বলেন, যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাদের সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থাকতে হবে। কারণ তাদের রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ঘাম ঝড়ানো যে উপার্জন সেই উপার্জনের টাকা দিয়েই আমাদের সবার সবকিছু চলে। একথাটা আমাদের ভুললে চলবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, চাকরিটা শুধু চাকরি নয়, এটা দেশের সেবা করা। তাঁর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তবলয়ের কর্মসূচি বাস্তবায়নে নজরদারির পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করবে তাদের মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণের কাজাও করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবসময় এটা মাথায় রাখতে হবে যে এই সব খেটে খাওয়া মানুষদের কষ্টের ফসলটাই আমরা ভোগ করি। কাজেই তাদেরকে কিভাবে আমরা সহযোগিতা করতে পারি সেটাই আমাদের দেখতে হবে।

সরকারের বৃত্তি-উপবৃত্তি প্রদান এবং উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা তহবিলের উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেধা যেন হারিয়ে না যায় সেজন্য মেধাবিদের আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাব। কারণ এই মেধাগুলোই আমার দেশের উন্নয়নের কাজে লাগবে।

ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির এই যুগে বিশ্বে বাজার খুঁজে বের করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন। প্রতিটি উন্নয়ন কর্মকান্ডকে টেকসই করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করবেন প্রতিটি এলাকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাদের দেখতে হবে নদী-নালা-খাল-বিল সহ জলাধারগুলো যেন সেখানে সংরক্ষিত থাকে। দেশকে উন্নত করার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ ও রাস্তাঘাট করার সময় সেটা যেন ঋতু বৈচিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় যাতে কোনসময় কোনকিছুতে বাধার সৃষ্টি করতে না পারে তা নিশ্চিত করারও আহবান জানান তিনি।

তথ্যসূত্র: বাসস


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর