আজ ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হলেন টেকনাফের ফারজানা


টেকনাফ প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের মন্ডল পাড়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে উঠে আসা ফারজানা আক্তার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেন। সে সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান এবং গৃহিণী মরিয়ম বেগমের কন্যা ফারজানা আক্তার (রিনা)।

শুরুতে চট্টগ্রাম জর্জ কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হয়ে ধাপে ধাপে নিজেকে গড়ে তোলেন। আর এখন ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেন। ফারজানা আক্তার (রিনা) তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন শাহ ওয়ালীউল্লাহ স্কুল থেকে। এরপর গুলজার বেগম স্কুল, ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যয়ন করে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে অনার্স (এলএলবি) এবং মাস্টার্স (এলএলএম) সম্পন্ন করেন।

অ্যাডভোকেট ফারজানা আক্তার বলেন, টেকনাফের মতো একটি সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে উঠে এসে জাতীয় পর্যায়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা ফারজানা আক্তারের এই কৃতিত্ব সত্যিই এক গর্বের ঘটনা। তার এই অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে নারী শিক্ষার অগ্রগতি, পরিবারিক বন্ধনের শক্তি এবং স্বপ্ন দেখার সাহসের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

বাবার মার দোয়ায়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবীর বেনড পরে খুবই আনন্দিত। আমার বাবার কারনে আমি এই জাইগায় পৌছাতে পেরেছি । আমি প্রথমে চিটাগাং জর্জ কোর্টের আইনজীবী হয়েছি। বর্তমানে ঢাকা হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হয়েছি। সব কিছু আমার বাবার মার কারনে সম্ভব হয়েছে । আমার বাবা সব সময় আমার পাশে ছিলেন। আমাকে সব সময় পড়া লিখা করার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন । মানুষটি নিঃশব্দে, অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। সব সময় ছায়ার মতো পাশে থেকেছেন। আপনাদের সবার দোয়া ও ভালোবাসা কামনা করছি। যেন এই দায়িত্বশীল পেশার মর্যাদা আমি সারাজীবন অটুটভাবে রক্ষা করতে পারি। আমার বাবা মার হাতে ব্যান্ডটা পড়তে পেরে সত্যি কৃতজ্ঞ ।
তিনি আরো বলেন, বাবার হাত ধরে ব্যাচ পরা আমার জীবনের এক অনন্য অনুভূতির নাম। আমি ঢাকা হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে আমার যাত্রা শুরু করলাম। দীর্ঘ পড়াশোনা, পরিশ্রম, আর স্বপ্নের পথ পাড়ি দিয়ে যখন অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সেই ব্যাচ হাতে পেলাম, তখন সেটি আমার গায়ে পরিয়ে দিলেন আমার প্রিয় বাবা। সেই মুহূর্তে আমার মনে পড়ে গেল, কত শত রাত বাবার চোখে ঘুম ছিল না। শুধু যেন আমি ঠিকমতো এগিয়ে যাই। আমার প্রতিটি সাফল্যের পেছনে যে মানুষটি নিঃশব্দে, অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন, সব সময় ছায়ার মতো পাশে থেকেছেন, তিনিই আমার বাবা।

ছোটবেলায় যিনি হাত ধরে হাঁটতে শিখিয়েছেন, তিনিই আজ আমার হাত ধরে আমাকে পেশাগত জীবনের প্রথম ধাপে পৌঁছে দিলেন। তাঁর মুখে আজ গর্বের হাসি ছিল, আর চোখে ছিল কিছু অশ্রু। আনন্দ আর আবেগের। আমি জানি, সেই হাসির পেছনে লুকিয়ে আছে বহু ত্যাগ, বহু স্বপ্ন, আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।

আমি আজকের এই দিনে শুধু ব্যাচ পরিনি, বরং আপনার স্বপ্ন, আদর্শ আর জীবনের মূল্যবোধকেও বুকে ধারণ করেছি। আপনার মতো একজন বাবার সন্তান হতে পেরে আমি গর্বিত। আমার মা বাবা আমার সাফ্যলের ভাগিদার । এই নতুন পথচলায় আপনার আশীর্বাদ আর ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আপনাদের সবার দোয়া ও ভালোবাসা কামনা করছি। যেন এই দায়িত্বশীল পেশার মর্যাদা আমি সারাজীবন অটুটভাবে রক্ষা করতে পারি।

পিতা হাবিবুর রহমান বলেন, ফারজানার এই অর্জন শুধু আমাদের পরিবারের নয়, পুরো সমাজের জন্যই এক অনুপ্রেরণা। সাংবাদিকতা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার গুরুত্ব এবং পারিবারিক সহযোগিতার বিষয়টি সে প্রমাণ করে দিয়েছে। তার সাফল্য নতুন প্রজন্মের জন্য পথ প্রদর্শক হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর