মোঃ শোয়াইব,হাটহাজারী: চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এবার সরিষা আবাদ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে চাষীরা। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ হেক্টর ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ঘোষণায় ২শ ২০ হেক্টরের স্থলে আবাদ হয়েছে ৪৪২ হেক্টর। যা চট্টগ্রামের সব উপজেলাকে ছাড়িয়েছে। সরেজমিন ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবারের ন্যয় এবারও হাটহাজারীতে গেল বছরের শেষার্ধে মাত্র ৯০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ শুরু করে উপজেলা অফিস। এর মধ্যে সরকারের বিশেষ ঘোষণা এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবেনা এ নির্দেশনাকে কাজে লাগিয়ে মাঠে নামে কৃষি কর্মকর্তা।
চাষীদের মাঝে সরিষা আবাদের সুফল তথা স্বল্প খরচে আবাদ, পরিবারের ভোজ্য তেলের চাহিদা পুরণ, গো খাদ্য (খৈল), জৈব সার উৎপাদন, মধুসহ আর্থিক লাভবানের নানান বিষয় তুলে ধরেন। বাড়িতে বাড়িতে উঠোন বৈঠক, নামাজের পর মসজিদে বয়ান, চায়ের দোকানে আড্ডা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় মিডিয়া কর্মীদের নিয়ে প্রচুর প্রচার প্রচারনা চালান। বিনামূল্যে বিতরণ করেন ভাল জাতের সরিষা বীজ ও প্রয়োজনীয় সার। দিতে থাকেন সবধরনের পরামর্শ। একের পর এক পরিদর্শন করেন সরিষা ক্ষেত।
সরিষা ফুলের হলুদ আভায় ছেয়ে যায় উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মাঠের পর মাঠ। স্বল্প খরচ তদুপরি কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় খুশি কৃষকরা। আমন ধান ঘরে তোলার পর বরো চাষের মধ্যেবর্তী সময়ে সরিষা চাষে বাড়তি ফলনে খুশি তারা। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কৃষক মো. মনছুর শাহ প্রকাশ লাল ভান্ডারী প্রায় ৮৫ বিঘা সরিষা আবাদ করেছেন। কৃষি অফিসারের পরামর্শে উৎসাহি হয়ে সরিষা আবাদ করে নিজেকে সফল দাবি করে বলেন, বরো ধানের আগেই সরিষা ঘরে তুলে পরিবারের ভোজ্য তেলের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি বাজারজাত করে বাড়তি টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
পাশাপাশি সরিষা থেকে আহরিত গো-খাদ্য (খৈল)তার ডেইরী ফার্মের ব্যয় কমিয়ে দিবে। খৈল কে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করে বিষমুক্ত সব্জি উৎপাদন করা যাবে। ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের প্রকাশ বড়ুয়া প্রায় ২ শ ৫০ কানি সরিষা চাষ করে এগিয়ে আছেন। এ ছাড়া উদালিয়া এলাকার মিজান ফারুক, চারিয়ার আতাউল্লাহসহ কয়েকশ কৃষক সরিষা চাষ করেছেন।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মামুন শিকদার বলেন, হাটহাজারী উপজেলায় এবার আবাদ করা সরিষা থেকে ৫৩০ মেঃ টন সরিষা বীজ পাওয়া যাবে। যার বাজারমূল্য ৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। ভোজ্য তেল উৎপাদন হবে ১ শ ৭৬ মেঃ যার বাজারমূল্য ৪ কোটি টাকার অধিক। একইসাথে গো-খাদ্য উৎপাদন হবে ৩শ ৫৪ মেঃ টন যার বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। তিনি বলেন, এ সফলতার প্রথম হিরো কৃষকরা। তারা করেছে বিধায় আমরা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছি। আগামিতে আরো অধিক সরিষা আবাদ করার আশা ব্যক্ত করেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলমের সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন।
Leave a Reply