Hom Sliderবাংলাদেশ

বালির বদলে পাহাড়ী মাটি দিয়ে সড়ক!


মো. শোয়াইব, হাটহাজারীঃ হাটহাজারী উপজেলায় সড়ক সংস্কার কাজে বালির বদলে ব্যবহার হচ্ছিলো মাটি। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে ঠিকাদার কক্ষৃপক্ষের শ্রমিকেরা জবাব দিয়েছে, ‘উপরের নির্দেশ আছে, বালির বদলে পরীক্ষামূলক মাটি ব্যবহার হচ্ছে।’ বিষয়টি চাটগাঁর সংবাদের প্রতিবেদক জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জয়শ্রী দে’কে জানালে তিনি নিয়েছেন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ড সফর আলী সড়কের আনিস প্যারারাল খাল থেকে গলাচিপা পর্যন্ত ১ হাজার ৬৮ মিটার পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। অধিক মুনাফার লোভে এই সড়ক সংস্কারের কাজে পাহাড়ী মাটি ব্যবহার করতে চেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলিফ এন্টারপ্রাইজ। কাজটির দায়িত্ব পেয়েছিলেন ঠিকাদার ইয়াকুব।

আরও পড়ুন হাটহাজারী উপজেলায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে দুর্নীতির অভিযোগ

স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর পর সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এতগুলো বছর আমরা অনেক কষ্ট ভোগ করেছি। সড়কটি হাজার হাজার জনগণ শত শত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করেন। বর্ষাকাল আসলে দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে বারবার অনুরোধ করা হলে শেষ পর্যায়ে রাস্তাটির কাজ শুরু হয়। রাস্তাটির কাজ শুরু হওয়া থেকে ঠিকাদারকে যত রকমের সহযোগিতা করা দরকার আমরা এলাকাবাসী তা করে যাচ্ছি। প্রথমদিকে কাজ সুন্দরভাবে শুরু করলেও শেষ পর্যায়ে প্রায় ৩শ’ মিটার রাস্তায় বালির জায়গায় পাহাড়ি মাটি দিয়ে কাজ চালাতে চাইছে। আমরা এলাকাবাসীরা একাধিকবার অভিযোগ জানালেও ঠিকাদাররা গ্রাহ্য করছে না। তারা আমাদেরকে বলেছে, পাহাড়ি মাটি দিয়ে রাস্তা করার জন্য উপরের নির্দেশ আছে। এটি পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হচ্ছে।’ এলাকাবাসী আরো বলেন, ‘রাস্তাটি এভাবে সংস্কার হলে এর স্থায়ীত্ব কম হবে।’

আরও পড়ুন হাটহাজারীতে নতুন পৌর প্রশাসক আবু রায়হান

এলাকাবাসীর কাছ থেকে অনিয়মের খবর জানতে পেরে পুরো বিষয়টি সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকৌশলী জানায় প্রতিবেদক। এরপর দ্রুত পদক্ষেপ নেয় হাটহাজারী উপজেলার প্রকৌশলী জয়শ্রী দে। কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। তিনদিন পর মাটিগুলো তুলে ফেলে বালি দিয়ে পুনরায় কাজ শুরু হয়।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে জয়শ্রী দে চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরে আমি যথাসাধ্য ব্যবস্থা নিয়েছি। কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। এখন মাটি তুলে বালি দিয়ে পুনরায় কাজ শুরু হয়েছে। তারপরও আমি প্রতিদিন এই বিষয়টা নিয়ে খবরা-খবর রাখছি।’

এ বিষয়ে ঠিকাদার ইয়াকুব কনট্রাকটারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি প্রতিবেদককে এড়িয়ে গিয়েছেন।

মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন খান সুমন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওই এলাকার বাসিন্দারা আমাকে ফোন করে এরকম একটি অভিযোগ দিয়েছে। আমিও বিষয়টি উপজেলার প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। ঠিকাদারের সাথেও কথা বলেছি। পরে মাটি উঠিয়ে বালি ফেলা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাটির দাম বালির চেয়ে বেশি কিন্তু এক্ষেত্রে পাহাড়ী মাটির জন্য কোনো অর্থব্যয় হয় না তাই বালির বদলে মাটি ব্যবহার করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে মাটি দিয়ে পিচঢালাই হলে স্থায়ীত্ব কমে যায়, কিন্তু এক্ষেত্রে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি ঠিকাদার। এ কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা।


Related posts

আজকের পর বন্ধ হয়ে যাবে অতিরিক্ত সিম

Saddam Hossain

এইচএসসি পরীক্ষা ৬ নভেম্বর থেকে শুরু, রুটিন প্রকাশ

Chatgarsangbad.net

ভাষা শহিদদের স্মরণে চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির আলোচনা

Chatgarsangbad.net

Leave a Comment