আজ ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২রা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

ভেষজ চিকিৎসা ও শিক্ষাখাতে ব্যাপক পরিকল্পনা


অনলাইন ডেস্কঃ সিনথেটিক (অ্যালোপ্যাথি) চিকিৎসা খাতের মতো হোমিও, ইউনানি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। চিকিৎসা সেবা প্রদানে অ্যালোপ্যাথি ও ভেষজ দুটো মাধ্যমকেই ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে এ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো যায়। তবে এতে এখনও অবহেলিত রয়েছে হারবাল খাত। ইউনানি-আয়ুর্বেদের জন্য পুরানো অর্ডিন্যান্স সংশোধিত করে আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ও রপ্তানি খাতে ভূমিকা রাখতে এ বিষয়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক পরিকল্পনা।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ভেষজ চিকিৎসার উচ্চশিক্ষা বিস্তারে ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে ইউনানি-আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইনের খসড়া। যা শিগগিরই অনুমোদনের জন্য সংসদে উত্থাপিত হবে। এ চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে গবেষণা কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হচ্ছে এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অধীনে ল্যাবও স্থাপিত হয়েছে। এই ল্যাবের মাধ্যমে চিরায়ত ওষুধের আধুনিকায়ন হবে। তাছাড়া এ ধরনের ওষুধ উৎপাদন করে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বহিঃর্বিশ্বে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিরায়ত মেডিসিনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বোর্ড অব ইউনানি অ্যান্ড আয়ুর্বেদিক গঠন করেছিলেন। যার মাধ্যমে ভেষজ চিকিৎসা খাতের একটি মাইলফলক রচিত হয়েছিলো। পরবর্তীতে এ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়লেও ১৯৯৯ সালে ইউনানি, আয়ুর্বেদিক ও হোমিও চিকিৎসকদের জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে নিয়োগ দিয়ে এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে মূলধারার সাথে সম্পৃক্ত করে তৎকালীন সরকার।

বর্তমানে সারাদেশে ২০০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৫৮টি জেলা হাসপাতাল ও ১২টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিরায়ত এ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের পরিকল্পনানুযায়ী ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভেষজ ম্যানুয়াল, ফার্মাকোপিয়া এবং ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন তৈরি ও সরবরাহ করা হয়েছে। চিরায়ত চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু এ খাতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের ডিপ্লোমাধারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও অবহেলিত। ডিগ্রি পর্যায়ে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোকে সরকারিকরণের মাধ্যমে উন্নয়ন করা হচ্ছে। তাছাড়া রপ্তানী খাতে অবদান রাখতে পারে হারবাল চিকিৎসার উপর কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন সরকার এখনো দেয়নি। মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা ও গবেষণার মাধ্যমে এ খাতের সেবা প্রদানের পাশাপাশি অর্থনীতি সমৃদ্ধ হতে পারে বলে মন্তব্য করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে চট্টগ্রাম ইউনানী তিব্বিয়া (মেডিক্যাল) কলেজের শিক্ষক ডা. প্রফেসর নুরুল আলম চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, চিকিৎসা শাস্ত্রে এখনও ইউনানী-আয়ুর্বেদের গুরুত্ব কমেনি বরং বেড়েছে। তাই এ খাতে সুনজর দিলে সরকার অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করতে পারবে। কিন্তু এক্ষেত্রে শিক্ষার মানোন্নয়নের সাথে সাথে সরকারি প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করানোটা জরুরি। একইসাথে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমাধারীদের কর্মসংস্থান যাতে হয়, সে দিকটায় খেয়াল দিতে হবে।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর