আজ ২১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চন্দনাইশে ব্রি ও বাংলামার্কের মাধ্যমে অ্যাসেম্বলি লাইনে কম্বাইন হারভেস্টার উৎপাদনের যাত্রা শুরু


চন্দনাইশ প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের চন্দনাইশে অবস্থিত বাংলামার্ক ফ্যাক্টরি শনিবার (৩ মে) বিকেলে পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)-এর চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম , বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-এর মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজে আর আই) এর মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. নার্গীস আক্তার।

এ সময় তাঁরা অত্যাধুনিক কৃষিযন্ত্র উৎপাদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত অ্যাসেম্বলি লাইনে কম্বাইন হারভেস্টার প্রস্তুতের শুভ উদ্বোধন করেন। বাংলামার্ক, ব্রি-এর কারিগরি সহায়তায় ইতোমধ্যেই থ্রেসার, স্ট্রো চপার, উইনোয়ার এবং গ্রেইন কালেক্টর প্রস্তুত ও বাজারজাত করে কৃষিখাতে দৃশ্যমান ভূমিকা রেখেছে। এবার প্রতিষ্ঠানটি কম্বাইন হারভেস্টার ও রাইস ট্রান্সপ্লান্টার উৎপাদনের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে। বিএআরসি চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম বলেন, “সরকার যদি অ্যাসেম্বলি লাইনভিত্তিক কৃষিযন্ত্র উৎপাদনে আর্থিক ও নীতিগত সহায়তা প্রদান করে, তবে দেশে অল্প খরচে আন্তর্জাতিক মানের কম্বাইন হারভেস্টার ও রাইস ট্রান্সপ্লান্টার তৈরি সম্ভব।

এতে আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং স্থানীয় কৃষি যন্ত্রশিল্প প্রসার লাভ করবে।” ব্রি-এর মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, “বাংলামার্কের সঙ্গে ব্রি-এর একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি (LoA) রয়েছে। এর আওতায় ব্রি আধুনিক কৃষিযন্ত্রের ডিজাইন, মাননিয়ন্ত্রণ এবং কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে, যা দেশীয় কৃষি যন্ত্র শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।” ব্রি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যে খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রমে বৃদ্ধিকরণ” প্রকল্পের আওতায় হাওর এলাকার জন্য উপযোগী কম্বাইন হারভেস্টার এবং মাঠ থেকে শস্য পরিবহনের উপযোগী ট্রলি উন্নয়ন করা হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক ও ব্রি-এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (CSO) ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে কৃষিযন্ত্র প্রস্তুত করার মাধ্যমে আমরা শুধু আধুনিক প্রযুক্তি কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি না, বরং স্থানীয়ভাবে একটি টেকসই কৃষি যন্ত্রশিল্প গড়ে তোলার ভিত্তিও তৈরি করছি।”

বাংলামার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম এবং উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “এই অ্যাসেম্বলি লাইন পূর্ণমাত্রায় চালু হলে বছরে শতাধিক কম্বাইন হারভেস্টার ও রাইস ট্রান্সপ্লান্টার উৎপাদন সম্ভব হবে, যা দেশের কৃষিজ চাহিদা পূরণে কার্যকর অবদান রাখবে।”এই উদ্যোগ কৃষকের উৎপাদন ব্যয় হ্রাস, সময় সাশ্রয় ও ফসলের অপচয় রোধে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। সরকার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প খাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্থানীয় কৃষিযন্ত্র উৎপাদনের এই ধারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর