আইন আদালতকভারবাংলাদেশসব খবর

শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড, মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ড

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড ও আরেকটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। আর অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। অভিযোগগুলো হলো—
১) উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান,
২) প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ,
৩) রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা,
৪) রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা,
৫) আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে করা মামলাগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম, যার রায় ঘোষণা হলো। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান বর্তমানে পলাতক এবং ভারতে অবস্থান করছেন। অপরদিকে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনই মামলার একমাত্র গ্রেপ্তার হওয়া আসামি, যিনি অ্যাপ্রুভার হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষ শুনানিতে বারবার দাবি করেছে যে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত সব ধরনের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন শেখ হাসিনা—অর্থাৎ তিনি পরিকল্পনাকারী, হুকুমদাতা ও সর্বোচ্চ নির্দেশদাতা হিসেবে ভূমিকা রাখেন।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এটি পুনর্গঠিত হয়, এবং পুনর্গঠনের পরই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়ের হয়।

গত বছরের ১৭ অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং সেদিনই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। পরে চলতি বছরের মার্চে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক আইজিপিকে আসামি করতে প্রসিকিউশনের আবেদন গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল।

এ বছরের ১০ জুলাই তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচ অভিযোগে বিচার শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলায় অংশগ্রহণকারী, আহত ব্যক্তি, প্রত্যক্ষদর্শী, চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দেন। পাশাপাশি ভিডিও–অডিও রেকর্ডিং, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও জব্দ করা গুলি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ১২ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শুরু হয়ে ২৩ অক্টোবর শেষ হয়। ওইদিনই চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।

বাংলাদেশের খবর/ শেখ হাসিনার বিচার রায়/ চাটগাঁর সংবাদ বাংলানিউজ

 


Related posts

কর্মক্ষেত্রে শৃঙ্খলার প্রতি অধিকতর যত্নশীল হতে হবে: সেনাপ্রধান

Chatgarsangbad.net

জয় বাংলা: সরকারি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় শ্লোগান বাধ্যতামূলক করছে সরকার

Shahidul Islam

চট্টগ্রামের ১৫ পুলিশ কর্মকর্তার পদোন্নতি

Chatgarsangbad.net

Leave a Comment