আজ ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পোকখালীর গোমাতলীতে অবৈধ বালি উত্তোলন চক্র ফের বেপরোয়া


নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার উপকূলীয় ইউপি পোকখালীর গোমাতলীতে অবৈধ বালি উত্তোলনকারী চক্র পুনরায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,রবিবার (২৫ মে) সকালে গোমাতলীর নয় একর চিংড়ি ঘের এলাকায় স্তুপ করে রাখা হাজার ঘন ফুট অবৈধ বালি ডাম্পার যোগে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চড়া দামে পুনরায় সরবরাহ শুরু করে।যা নিয়ে এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বালি গুলো বিক্রি করছেন পশ্চিম গোমাতলী আট নং ওয়ার্ড এর বাসিন্দা নুরুল আবছার প্রকাশ হান্নান মিয়া। যিনি আবার বালিস্থল সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) কর্তৃক নির্মিত সুইসের সভাপতি ও গোমাতালী ইআইপি /২ এর সভাপতিও।

এ বিষয়ে অভিযোগ উঠা নুরুল আবছার প্রকাশ হান্নান মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বালি সরবরাহের কথা স্বীকার করলেও তা নদী থেকে সরকারী কাজে ব্যবহারের জন্য উত্তোলনকৃত বালি দাবি করে বলেন,কাজ শেষে অতিরিক্ত থেকে যাওয়ায় সেগুলো তিনি বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন বলে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা করেন। তবে সরকারি কাজে নদী থেকে বালি উত্তোলন করা যায় কিনা জানতে চাইলে সুদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে চৌফলদণ্ডী পওর শাখার দায়ীত্বে থাকা পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ: শাহ আরমান সালমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান,নদী থেকে বালি উত্তোলন করে বিক্রির কোন অনুমতি তাদের নেই। সরকারি নির্মাণ কাজের জন্য যা উত্তোলন করেছিলেন তা কাজের সাথে শেষ হয়ে গেছে।

ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং কাউকে না পেয়ে অভিযোগ উঠা ব্যাক্তিকে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ অফিসে উপস্থিত হতে বলেছেন বিস্তারিত জানতে।

পাউবো কক্সবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলামের সরকারী মোবাইল নাম্বারে বারবার কল দিলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, যাদেরকে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপকূলীয় এলাকার স্লইচ গেট গুলো পরিচালনা ও রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছেন তারা যদি এটিকে পূজি করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রক্ষকের পরিবর্তে ভক্ষকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হন, তবে সরকারি সম্পদ কতটুকু রক্ষা হবে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।তারা অবিলম্বে এসব বালি জব্দ ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

উল্লেখ্য , বিগত পলাতক আওয়ামী সরকারের সময় থেকে উপকূলীয় এলাকা গোমাতলীর চিহ্নিত কতিপয় আওয়ামী দোসর গোমাতলী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে আসছে। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চড়া দামে এসব বালি ডাম্পারযোগে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছে। ঐ চক্রটি আওয়ামী সরকার পতনের পর কিছুদিন গা ঢাকা দেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সম্প্রতি চক্রটি প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সাথে অর্থের বিনিময়ে গোপন সম্পর্ক গড়ে তুলে পুনরায় এলাকায় ফিরে আওয়ামী বিরোধী স্থানীয় কিছু নেতার সাথে আঁতাত করে পূর্বের ন্যায় অবৈধ বালি উত্তোলন করে স্তুপ করে রাখে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর