ফিফা বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচের লড়াইয়ে শেষ হাসিটা ছিলো আর্জেন্টিনার। অবশেষে শিরোপা নিয়েই বাড়ি ফিরছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে অধিনায়ক মেসিকে হতাশ করেনি আর্জেন্টাইন সতীর্থরা। কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফাইনালের মঞ্চ যেন সাজানো ছিল শুধুমাত্র এ সময়ের বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির জন্যই। ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মত বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে আর্জেন্টিনা। এটি ৩৫ বছর বয়সী মেসির শেষ বিশ্বকাপ ও প্রথম শিরোপা। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে আট বছর আগে ফাইনালে গিয়েও মেসির হাতে বিশ্বকাপের শিরোপা উঠেনি। সেই স্বপ্ন আজ পূরণ হলো।
নির্ধারিত সময়ের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে উভয় দল একটি করে গোল করে । এতেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাই ব্রেকারে। এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকেও ফ্রান্সের শেষ রক্ষা হলোনা। মেসির পেনাল্টি ও ডি মারিয়ার গোলে প্রথমার্ধেই ২-০ ব্যবধানে লিড নেয় আর্জেন্টিনা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শেষভাগে কিলিয়ান ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধানে জোড়া গোলে ফ্রান্স দারুনভাবে লড়াইয়ে ফিরে আসে। এরপর অতিরিক্ত সময়ে ১০৮ মিনিটে আবরো মেসি আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন। ১১৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে হ্যাটট্রিক পূরনের পাশাপাশি দলকে আবারো সমতায় ফেরান দুর্দান্ত এমবাপ্পে।
টাইব্রেকারে প্রথম দুই শটেই এমবাপ্পে ও মেসি নিজ দলকে এগিয়ে রাখেন। কিন্তু পরের শটটি কিংসলে কোম্যানকে রুখে দেন এার্জন্টাইন গোলরক্ষক মার্টিনেজ। কিন্তু বদলী খেলোয়াড় পাওলো দিবালা ভুল করেন। ফ্রান্সের তৃতীয় শটটি বাইরে পাঠান অরিলিয়েন টিচুয়ামেনি। পরের শটে লিনদ্রো পারেডেস গোল করে আর্জেন্টিনাকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। চতুর্থ শটে কোলো মুয়ানি ফ্রান্সের আশা বাঁচিয়ে রাখলেও মন্টিয়েলের শট আটকাতে পারেননি লোরিস। এতেই আর্জেন্টিনার স্বপ্নের শিরোপা নিশ্চিত হয়।
এনিয়ে আর্জেন্টিনা ষষ্টবার ও ফ্রান্স চতুর্থবারের মত ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এনিয়ে ১১ বারের মত বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আমেরিকান ও ইউরোপীয়ান দল একে অপরের মোকাবেলা করছে। এর মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকান দল সাতবার ও ইউরোপীয়ান দল নিয়েছে তিনটি শিরোপা। তিনটি পরাজয়ের মধ্যে আর্জেন্টিনাই হেরেছে দুটিতে (জার্মানীর বিপক্ষে ১৯৯০ ও ২০১৪)। আরেকবার ১৯৯৮ সালে ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল ফ্রান্স।
লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছিল ফ্রান্স। অসুস্থতা কাটিয়ে দলে ফিরেছেন মিডফিল্ডার আদ্রিয়েল রাবিয়ত। এছাড়া দলে আরো ফিরেছেন সেন্টার-ব্যাক ডায়ট উপামেকানো। এই দুজনই ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় মরক্কোর বিপক্ষে সেমিফাইনালের মূল দলে ছিলেন না। এই অসুস্থতায় ফ্রান্স দলে আরো কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছে। তাদের জায়গা করে দিতে দিদিয়ের দেশ্যম ইউসুফ ফোফানা ও ইব্রাহিমা কোনাটেকে বদলী বেঞ্চে নিয়ে গেছেন। এছাড়া পুরো ফ্রেঞ্চ দল অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার একই উপস্বর্গ নিয়ে অনুশীলন করতে না পারা অভিজ্ঞ সেন্টার-ব্যাক রাফায়েল ভারানেও খেলার জন্য নিজেকে ফিট প্রমান করেছেন। আক্রনমণাকে কিলিয়ান এমবাপ্পের সাথে অভিজ্ঞ অলিভার গিরুদ তার জায়গা ধরে রেখেছেন। আজ সকাল থেকেই গুঞ্জন ছিল এমবাপ্পে বদলী হিসেবে নামবেন এবং তার পরিবর্তে মার্কোস থুরাম শুরুতে খেলতে নামবেন।