আজ প্রখ্যাত বাঙালি সংগীতশিল্পী, কবি, লেখক এবং সুরকার হেমাঙ্গ বিশ্বাসের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৭ সালের ২২ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি গাজীর গান, ধামাইল গান, বাইদ্যার গান, কবি গান, হোরি গানসহ নানা রাগের সুরকে আত্মস্থ করে গেয়েছেন অনেক গান।
হেমাঙ্গ বিশ্বাস ১৯১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৩১৯ বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মস্থান তৎকালীন শ্রীহট্ট বা সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার চুনারুঘাট উপজেলার মিরাসি গ্রামে। বাবা হরকুমার বিশ্বাস ও মা সরোজিনী দেবী। কলেজে থাকতেই স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৩২ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। রাজনৈতিক আন্দোলনের কারণে ১৯৩৫ সালে প্রথমবার কারাবন্দি হওয়ার পর তিনি যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত হন। ১৯৪৮ সালে তেলেঙ্গানা আন্দোলনের সময় তিনি আবারও গ্রেপ্তার হন এবং তিন বছর কারাবন্দি থাকেন।
১৯৩৮-৩৯ সালে বিনয় রায়, নিরঞ্জন সেন, দেবব্রত বিশ্বাস প্রমুখের সঙ্গে মিলে ভারতীয় গণনাট্য সংঘ বা ‘আইপিটিএ’ গঠন করেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে বাংলার প্রগতিশীল লেখক শিল্পীদের আমন্ত্রণে তিনি প্রথম কলকাতায় আসেন সংগীত পরিবেশন করতে।
১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে তার উদ্যোগে এবং জ্যোতিপ্রকাশ আগরওয়ালের সহযোগিতায় ‘সিলেট গণনাট্য সংঘ’ তৈরি হয়। স্বাধীনতার আগে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের গানের সুরকারদের মধ্যে তিনিই ছিলেন প্রধান। চীন-ভারত মৈত্রীর ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল।
‘মাস সিঙ্গার্স’ নামে নিজের দল গঠন করে তিনি গ্রাম-গ্রামান্তর ঘুরে ঘুরে গান গেয়ে বেড়িয়েছেন। তিনি ‘কল্লোল’, ‘তীর’, ‘লাললণ্ঠন’ প্রভৃতি নাটকের সংগীত পরিচালক ছিলেন।
রাঢ় বঙ্গের ঝুমুর, বরেন্দ্রীর ভাওয়াইয়া, চটকা, জারি-সারি, মুর্শিদি, বঙ্গের ভাটিয়ালি, বীরভূমের বাউল, নদীয়ার ফকির বাউল হয়ে হাছন রাজায় মিলেছে তার গানের পথচলা।
Leave a Reply