আজ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

আজ ‘লাল মিয়া’র শততম জন্মবার্ষিকী


চাটগাঁর সংবাদ ডেস্কঃ নড়াইলের চিত্রাপাড়ের মানুষ লাল মিয়া। সবাই তাঁকে চেনে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান নামে। ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পিতার নাম মেছের আলী মা মাজু বিবি। তাঁর শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও নড়াইল জেলা প্রশাসন বেশ কিছু কর্মসূচি পালেন করবে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, আর্ট ক্যাম্প, শিশুদের নিয়ে নৌকা ভ্রমণ, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী। এসব কর্মসূচিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি উপস্থিত থাকবেন ।
নড়াইলের সঙ্গে সুলতানের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। ১৯২৮ সালে তিনি নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে লেখাপড়া শুরু করেন। ১৯৩৮ সালে কলকাতায় গিয়ে ছবি আঁকা শুরু। ১৯৪১ সালে কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তির সুযোগ পান । ১৯৫৩ সালে নড়াইলে ফিরে আসেন। শিশু- কিশোরদের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি চারুকলা শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন তিনটি স্কুল । অকৃতদার গুণী এ শিল্পী মৃত্যুকালে রেখে গিয়েছিলেন পালিত ছেলে দুলাল চন্দ্র দে ও মেয়ে নিহার বালা। সুলতানের মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতি আঁকড়ে ধরে সুলতানের বাড়িতে বসবাস করতেন তারা। ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর ৮৩ বছর বয়সে মারা যান সুলতান কন্যা নিহার বালা। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর গুণী এ শিল্পীর মৃত্যুর পর তাঁর বাসভবন, শিশুস্বর্গ ও সমাধিস্থল ঘিরে ৫৪ শতক জমির ওপর ‘এস এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা’ নির্মাণ করা হয়।

সুলতান ১৯৮০ সালে নিজ বাড়িতে শুরু করেন শিশুস্বর্গের নির্মাণকাজ। ১৯৯২ সালে ৯ লাখ মতান্তরে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নিজ উদ্যোগে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের ‘ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ’ নামে দ্বিতল নৌকা নির্মাণ করেছিলেন। এ নৌকায় তিনি শিশুদের নিয়ে চিত্রানদীতে ভ্রমণ করতেন এবং নৌকায় বসেই তাদের চিত্রাঙ্কন শেখাতেন। সুলতানের শিল্পকর্মের বিষয়বস্তু ছিল বাংলার কৃষক, জেলে, তাঁতি কামার, কুমার, মাঠ, নদী, হাওর, বাঁওড়, জঙ্গল, সবুজ প্রান্তর ইত্যাদি।

শিল্পী এস এম সুলতান ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সম্মাননা হিসেবেও স্বীকৃতি পান তিনি। সুলতানের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তার নিজ বাড়িতে নির্মিত হয়েছে এস এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা।

শিল্পী সুলতান যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেন এবং তার ছবি ভারতের সিমলা, পাকিস্তানের লাহোর, করাচি, নিউইয়র্ক, বোস্টন, মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঢাকায় খ্যাতনামা বিভিন্ন চিত্রশিল্পীর সঙ্গে যৌথভাবে প্রদর্শিত হয়।

১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। নড়াইলের নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।

তথ্যসূত্র: সংগৃহীত


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর