আজ ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: শহিদ আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান

শহিদ আসাদ দিবস আজ


অনলাইন ডেস্কঃ শহিদ আসাদ দিবস আজ। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারির এই দিনে গণঅভ্যুত্থান চলাকালে পাকিস্তানি পুলিশের গুলিতে শহিদ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আসাদ (আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান)। তার শাহাদাৎবরণের ঐতিহাসিক পটভূমি স্মরণে কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন, ‘আমাদের দুর্বলতা ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক; আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা।’

শহিদ আসাদ ১৯৪২ সালে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার বর্ধিষ্ণু ধানুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মেছিলেন। তার পিতা এম এ তাহের ছিলেন শিবপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার মাতা মতিজাহান খাদিজা খাতুন ছিলেন নারায়ণগঞ্জ শহরের খ্যাতনামা আইটি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষিকা। তাদের ধানুয়া গ্রামের বাড়িটি ‘মিয়াজীবাড়ি’ আর আসাদের বাবা ‘তাহের মওলানা সাহেব’ নামে সমধিক পরিচিত। আসাদদের বাড়িটিকে ‘মাস্টারবাড়ি’ বলেও ডাকে অনেকে।

১৯৬৯ সালে মৃত্যুকালীন সময়ে শহিদ আসাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে এম এ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি তৎকালীন ঢাকা হল (বতর্মান শহীদুল্লাহ হল) শাখার পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে এবং পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (ইপসু-মেনন গ্রুপ), ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আজ শহিদ আসাদ দিবস স্মরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতন এবং দমন-পীড়নে বাংলার মানুষ যখন দিশেহারা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ছয়-দফা তখন বাঙালির মুক্তির দিশারী হিসেবে আবির্ভূত হয়। ছয়-দফা হয়ে ওঠে বাঙালির প্রাণের দাবি।

শেখ হাসিনা বলেন, ছয়-দফার পক্ষে প্রবল জনমতের জোয়ার দেখে আতঙ্কিত সামরিক জান্তা আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করে, যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে সমধিক পরিচিত। বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘোষিত ছয়-দফা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পরিণত হন নিপীড়িত ও নির্যাতিত বাঙালির মুক্তির মূর্ত প্রতীকে।

আরও পড়ুন শহিদ বুদ্ধিজীবি দিবস

তিনি বলেন, কারাগারে আটক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে গর্জে উঠে সারা বাংলার মানুষ। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় ছাত্র-জনতার চলমান মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে আসাদুজ্জামান শহীদ হন এবং অনেকে আহত হন। শহীদ আসাদের এই আত্মত্যাগ চলমান আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে জানিয়েছেন, শহীদ আসাদ দিবস, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে অবিস্মরণীয় একটি দিন। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্রসমাজের ১১ দফা দাবি আদায়ের মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ছাত্রনেতা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদ।

দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে শহীদ আসাদ একটি অমর নাম উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদের আত্মত্যাগ আন্দোলনকে বেগবান করে। জেল-জুলুম উপেক্ষা করে স্বাধিকারের দাবিতে সোচ্চার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাজপথে নেমে আসে। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয় এবং গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। স্বৈরশাসক আইয়ুব ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন, পতন হয় স্বৈরশাসনের।

তথ্যসূত্র: সংগৃহীত


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর