অনলাইন ডেস্কঃ একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিনের ৮০তম জন্মবার্ষিকী আজ। দিনটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম গৌরীপুর উপজেলা শাখা, গৌরীপুর সাংবাদিক সমাজ ও যুগান্তর স্বজন সমাবেশের উদ্যোগে আলোচনাসভা, কেককাটা, রচনা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।
চারণ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিন সাংবাদের নেশায় চষে বেড়িয়েছেন উত্তরবঙ্গের মাঠের পর মাঠ, গ্রাম থেকে গ্রামান্তর। সৃষ্টি করেছেন সংবাদ ভাষ্য, প্রতিবেদন, ফিচার। তার প্রতিটি প্রতিবেদনই ছিল গ্রাম বাংলার অকৃত্রিম চিত্র আর মানুষ ও সমাজের বাস্তব মুখচ্ছবি। জীবদ্দশায় তিনি নিজেকে ‘তৃণমূল মানুষের সংবাদকর্মী’ হিসাবে দাবি করতেন। আর তাকে লোকে বলত চারণ সাংবাদিক। ১৯৪৫ সালের ১৮ জানুয়ারি রংপুর শহরে তার জন্ম। সাংবাদিকতা শুরু ১৯৬৬ সালে দৈনিক আজাদ পত্রিকা দিয়ে। ১৯৭৬ সালে দৈনিক সংবাদে যোগ দেওয়ার পর থেকে তিনি মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলেন পত্রিকাটির সঙ্গে। ২০ বছর টানা ‘সংবাদ’-এ কাজ করার পরে ১৯৯৫ সালের ২৪ এপ্রিল দৈনিক জনকণ্ঠে সিনিয়র রিপোর্টার হিসাবে যোগ দেন। পথে প্রান্তরের অনুসন্ধানে গিয়ে জীবনেরও যবনিকা ঘটে এই সাংবাদিকের। ১৯৯৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর ফুলছড়ি থানাধীন যমুনা নদীতে কালাসোনার ড্রেজিং পয়েন্টে দুটি নৌকাডুবির তথ্যানুসন্ধান করতে অসুস্থ শরীর নিয়ে যাত্রা শুরু করেন গাইবান্ধায়। পথে ‘শেরেবাংলা’ নামক ফেরিতে দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। ফেরির ছাদ থেকে হঠাৎ পানিতে পড়ে যান। স্থানীয় নৌকার মাঝিরা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করতে পারলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
আরও পড়ুন মোনাজাত উদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী
মোনাজাত উদ্দিন কাজের নিষ্ঠতার জন্য অনেক সম্মাননা পেয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালে ‘সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরী স্মৃতি পদক’, দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত ‘মানুষ ও সমাজ’ প্রতিবেদনের জন্য ফিলিপস্ পুরস্কার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স পুরস্কার, ১৯৯৫ সালে অশোকা ফেলোশিপ লাভ করেন।
১৯৯৭ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পদক একুশে পদক (মরণোত্তর) লাভ করেন। এ ছাড়া গল্প, কবিতা, ছড়া ও নাটক রচনায় তার দক্ষতা ছিল। মৃত্যুর আগে ৯টি ও পরে ২টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার।