অনলাইন ডেস্ক
চলমান পরিস্থিতিতে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এদিকে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি একদিন এগিয়ে আজ সোমবার পালন করার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই সঙ্গে তারা এ কারফিউ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
যারা কারফিউয়ের আইন ভঙ্গ করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং জিরো টলারেন্স দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ(ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
অপরদিকে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ৬ আগস্টের পরিবর্তে ৫ আগস্ট করা হলো। আগামীকালই সারাদেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘এক দফার পর আর তাদের কোনো আদেশ কার্যকর থাকে না। সে জন্য সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঘোষণা করা কারফিউকে বাতিল ঘোষণা করা হলো।’
এর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শহীদদের স্মরণে সোমবার সারাদেশে নিহতের স্থানগুলোতে শহীদ স্মৃতিফলক উন্মোচন করা হবে। ঢাকায় বেলা ১১টায় শাহবাগে শ্রমিক সমাবেশ এবং বিকাল ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারী সমাবেশ হবে। পাশাপাশি সারাদেশে বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। মঙ্গলবার (কাল) ‘ছাড়তে হবে ক্ষমতা, ঢাকায় আসো জনতা’ স্লোগানে সারাদেশের ছাত্র, নাগরিক ও শ্রমিকদের ঢাকায় আসার আহ্বান জানিয়ে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন নাহিদ। সেদিন দুপুর ২টায় আন্দোলনকারীদের শাহবাগে জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, সব এলাকায়, পাড়ায়, গ্রামে, উপজেলায়, জেলায় ছাত্রদের নেতৃত্বে সংগ্রাম কমিটি গঠন করুন। যদি ইন্টারনেট ক্র্যাকডাউন হয়; আমাদের গুম, গ্রেপ্তার, খুনও করা হয়; যদি ঘোষণা করার কেউ না-ও থাকে, এক দফা দাবিতে সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত সবাই রাজপথ দখলে রাখবেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।’
কর্মসূচি এগিয়ে আনার কারণ ব্যাখ্যা করে গতকাল আসিফ মাহমুদের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, আজ অর্ধশতাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে খুনি হাসিনা। চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার সময় এসে গেছে। বিশেষ করে আশপাশের জেলাগুলো থেকে সবাই ঢাকায় আসবেন এবং যারা পারবেন আজই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। ঢাকায় এসে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা রাজপথগুলোতে অবস্থান নিন। চূড়ান্ত লড়াই, এই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত স্বাক্ষর রাখার সময় এসে গেছে। ইতিহাসের অংশ হতে ঢাকায় আসুন সবাই। যে যেভাবে পারেন, কালকের মধ্যে ঢাকায় চলে আসুন। ছাত্র-জনতা মিলে এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটাব।
এর আগে সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে সহযোগিতা করার নির্দেশনা দিয়ে এক বিবৃতিতে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের আন্দোলনের খবর দেশবাসী এবং বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছেন সাংবাদিকরা। পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করুন; সংঘর্ষ, সংঘাতের সময় তাদের রক্ষা করুন। আমাদের এ লড়াইয়ে তারাও গুরুত্বপূর্ণ অংশ।