আজ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে জাতিসংঘে ‘মিয়ানমার পরিস্থিতি’ নিয়ে প্রস্তাব


জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো ‘মিয়ানমার পরিস্থিতি’ নিয়ে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা সংকট ও এর টেকসই সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ প্রস্তাবের মূল উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেছে ব্রিটেন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে ১২ ভোটে প্রস্তাবটি পাশ হয়। কোন সদস্যই প্রস্তাবে ভেটো কিংবা এর বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি। তবে চীন, রাশিয়া ও ভারত ভোট দানে বিরত থাকে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, প্রস্তাবে মিয়ানমারের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, এর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্রমাবনতি এবং রাজনৈতিক নেতাদের নির্বিচারে আটকের কথা উল্লেখ করে সহিংসতা বন্ধ ও অন্তর্ভূক্তিমূলক রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানামুখী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতে এই প্রস্তাব মিয়ানমারের চলমান সংকট নিরসনে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ সংস্থার দৃঢ়তারই প্রদর্শন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই প্রস্তাব রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ পুনরায় আকৃষ্ট করবে।

বাংলাদেশে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ঢল নামার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন যে, এদেশের অস্থায়ী আশ্রয় থেকে এসব রোহিঙ্গাকে অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশ বর্তমানে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং তাদের মানবিক সহায়তা দেয়ার বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়েছে।

এছাড়া প্রস্তাবে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদাপূর্ণ ও স্থায়ীভাবে ফিরে যাওয়া এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রস্তাবে রাখাইন রাজ্যের সংকটের মূল কারণ সমূহ চিহ্নিত এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদাপূর্ণ ও স্থায়ীভাবে ফিরে যাওয়ার প্রয়োজনীয় শর্তসমূহ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

এছাড়া দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে প্রস্তাবে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নে জাতিসংঘের সম্ভাব্য সমর্থন বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ২০২৩ সালের ১৫ মার্চের মধ্যে একটি রিপোর্ট প্রদানে জাতিসংঘ মহাসচিব ও মিয়ানমারে তার বিশেষ দূতকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ে নিয়মিত আলোচনার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টাকে আরো জোরদার করবে।

এই প্রস্তাবের আলোচনা নিয়ে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের দূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত প্রস্তাবে বাংলাদেশের স্বার্থের সুনির্দিষ্ট ইস্যু গুলো নিশ্চিতে নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সাথে একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি আরো বলা হয়েছে, এই প্রস্তাব রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের বহুমুখী প্রচেষ্টার উল্লেখযোগ্য সফলতার সাক্ষ্য বহন করছে।

তথ্যসূত্র: বাসস

 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর