আজ ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: পরিবেশ বাঁচাতে ধর্মীয় সম্প্রীতি

পরিবেশ বাঁচাতে ধর্মীয় সম্প্রীতি


অনলাইন ডেস্কঃ জলবায়ু সংরক্ষন ও পরিবেশ বাঁচাতে ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে চট্টগ্রামে। বুধবার (১২ জুন) খ্রিস্টিয় ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কমিশন, চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিস এবং কর্ণফুলী এরিয়া প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে নগরীর একটি অভিজাত হোটেলেআন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সেমিনারে আয়োজন করা হয়।

সেমিনারের প্রতিপাদ্য ছিলো জলবায়ু সংরক্ষণে ধর্মীয় সম্প্রীতি। কর্ণফুলী এরিয়া প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ম্যানেজার মি. জনি রোজারিও উক্ত সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন।

এতে স্বাগত বক্তা খ্রিস্টিয় ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কমিশন, চট্টগ্রাম আর্চন্ডাইয়োসিসের সমন্বয়কারী মি. এমরোজ গোমেজ বলেন ‘সৃষ্টিকর্তা আমাদের সৃষ্টি করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেছিলেন উত্তম হয়েছে। এরপর তিনি মানুষকে সমস্ত সৃষ্টির যত্নের কথা বলে কর্তৃত্ব প্রদান করেন এবং সৃষ্টির যত্ন নিতে উপভোগ করতে বলেন। কিন্তু আমরা মানুষ সৃষ্টিকে উপভোগ করছি ঠিকই তবে যত্ন নিচ্ছি না।

আরেফিন রিয়াদ ও ইউজিন শুভর সঞ্চালনায়, সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম কাথলিক আর্চডাইয়োসিসের প্রধান ধর্মগুরু ও সংলাপ কমিশনের চেয়ারম্যান পরম শ্রদ্ধেয় আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার, সিএসসি।

আরও পড়ুন আন্ত:ধর্মীয় সংলাপ কমিটির সেমিনার ১২ জুন

তিনি বলেন, জলবায়ু সংরক্ষণ করতে সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্ট প্রকৃতি ও সৃষ্ট মানব সমাজের মধ্যে ত্রিমাত্রিক সম্পর্ক জোরদার করা প্রয়োজন। ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এই সম্পর্কের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা ধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতির মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। সকল ধর্মের ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ধর্মীয় সাধু-সন্তদের জীবনাদর্শ থেকে সংযমী হওয়া, পারস্পরিক মর্যাদা প্রদান করা এবং যেসব ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে তার জন্যে বিনম্রতার সাথে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষতিপূরণের মনোভাব গড়ে তোলা প্রয়োজন যাতে প্রকৃতির যত্নে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হতে পারে।

এসময় জলবায়ু সংরক্ষণে ধর্মীয় সম্প্রীতির উপর সামগ্রিক আলোচনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্ট সায়েন্সেস বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসীমউদ্দীন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত দুই দশক ধরে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব সুস্পষ্ট। ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ দূর্যোগপ্রবণ দেশ, এর পাশাপাশি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দূর্যোগের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের সুন্দর পৃথিবী বিনির্মাণ করতে হলে আমাদের প্রয়োজন সম্মিলীত প্রচেষ্টা।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন নটর ডেম কলেজের প্রভাষক ফাদার ড. লিটন হিউবার্ট গোমেজ সিএসসি, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুন্নবী আজহারী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য্য, লতিফা সিদ্দীক ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিমুল বড়ুয়া। তারা ইসলাম, খ্রীস্টান, হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের আলোকে জলবায়ু রক্ষার বিষয়ে আলোচনা করেন।

চার ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে উপস্থাপিত বিদগ্ধ বক্তাগণের জ্ঞানগর্ভ বক্তব্যের আলোকে উপস্থিত
সুধী সমাবেশ আলোচনায় অংশ নিয়ে মতামত প্রকাশ করেন ও অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন আয়োজক কমিটির সদস্য- তানভীর হোসাইন, দিলীপ বড়ুয়া, লায়ন ডা: বরুণ কুমার আচার্য, উইলিয়াম গমেজ, আক্রোফিন রিয়াদ, শ্যামল নন্দী, ইউজিন শুভ গোলদার, যোসেফ ডি সিলভা, সি. মমতা পালমা এলএইচসি, ফ্লেভিয়ান ডি কস্তা ও জুলিয়ান ডি কস্তা প্রমুখ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর