➤শাহরিয়ার সুমন
পার্বত্য অঞ্চল বান্দরবনের রোয়াংছড়িতে ৮ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিহতদের মরদেহ গ্রহণ করতে আসেনি পরিবারের কেউ। ময়নাতদন্তের পর মরদেহগুলো বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।বান্দরবন আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে খামতাং পাড়ার খেয়াং জনগোষ্ঠীর দেড় শতাধিক পরিবার।এ হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ শনিবার ৮ এপ্রিল ২০২৩ দুপুর পৌনে তিনটায় ময়নাতদন্তের পর মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী খামতাং পাড়া এলাকায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মী কেএনএ-এর সাথে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক-এর মধ্যে গোলাগুলিতে ৮ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের ময়নাতদন্তের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে পরিবারের স্বজনরা মরদেহ গ্রহণ করতে না আসায় মরদেহগুলো বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি লালজার বম মরদেহগুলো গ্রহণ করে ধর্মীয় রীতি অনুসারে দাফনের জন্য নিয়ে যান। নিহতরা হলেন ভানদু বম (৩৫), সাংখুম বম (৪৫), সানফির থাং বম (২২), বয়ে রেম বম (১৭), জাহিম বম (৪০), লাল লিয়ান নাং বম (৪৪) এবং লালঠা জার বম (২৭)। অপরজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে, বম জনগোষ্ঠীর আট সদস্যকে হত্যার ঘটনায় রোয়াংছড়ি, রুমা এবং থানচি এ তিনটি উপজেলায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মী (কেএনএ)। ঘোষণা না মানলে চলন্ত গাড়িতে ব্রাশ ফায়ার করার হুমকিও দিয়েছে সংগঠনটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের পর মরদেহগুলো স্বজনরা উপস্থিত না থাকায় বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে সন্ত্রাসীদের হুমকির বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য জানা নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে, সশস্ত্র দু’টি সন্ত্রাসী সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পাহাড়ে। আতঙ্ক কাটেনি রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে। ভয়ে আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে খামতাং পাড়ার খেয়াং জনগোষ্ঠীর দেড় শতাধিক পরিবার। তাদের মধ্যে রোয়াংছড়ি সদরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ৯০টি পরিবারের ১৭৮ জন।
অন্যদিকে, রুমায় আশ্রয় নিয়েছে ষাটটি পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশু। আশ্রয়গ্রহণকারীদের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খাবার এবং পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মী(কেএনএ)-এর সাথে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)-এর মধ্যে গোলাগুলিতে ৮ জনের মৃত্যু হয়।
Leave a Reply