বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর শেষ বিদায় জানাতে ঝড়ো হয়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযাত্রী-সহকর্মীরা। আজ সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাজেদা চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা। গতকাল রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
শ্রদ্ধা জানানোর পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহকর্মী ছিলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তিনি দেশের রাজনীতির একটা বড় অধ্যায় জুড়ে রয়েছেন। তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
তিনি মরদেহে ফুল দিয়ে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধিকার, স্বাধীনতার সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে তিনি ছিলেন সৈনিক। স্বাধীনতা পরবর্তী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ পুনর্গঠন, রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর প্রতিটি সংকটে তিনি দলের পাশে ছিলেন।
এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শহীদ মিনারে সাজেদা চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা হারিয়েছি রাজনৈতিক অঙ্গনের এক সাহসী নেতাকে। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারীদের এগিয়ে নেওয়ার পেছনে তার ভূমিকা অপরিসীম। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তিনি যখন থেকে রাজনীতি শুরু করেছেন তখন থেকে নারীদের এগিয়ে নেওয়া, রাজনীতিতে তাদের এগিয়ে নেওয়া, সংগ্রাম করা, পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে অবদান তা স্মরণীয়। আমি তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছেন, সাজেদা চৌধুরী একজন অকুতোভয় নির্ভীক সেনানি ছিলেন। উনি ১৯৬৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি দলের সংকটকালে কখনও সরে যাননি। প্রতিটি আন্দোলনে উনি অত্যন্ত তেজস্বী ভূমিকা পালন করেছেন। সত্তরের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মহিলাদের সংগঠিত করা এবং তাদের মুক্তিযুদ্ধে পাঠানোসহ নানা কাজ তিনি মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে মিলে করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে জিয়াউর রহমান যে পলিটিকাল অ্যাক্ট করেছিল বঙ্গবন্ধুর নাম নিয়ে দল করা যাবে না— সেই সময়েও তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। তখন তিনি ভারপ্রাপ্ত মহিলা সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কঠিনভাবে এর বিরোধিতা করেন। তার সুদৃঢ় ভূমিকায় আমরা বঙ্গবন্ধুর নামে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছিলাম। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে আমরা কাজ করেছি। শেখ হাসিনা দেশে আসার পর তিনি গ্রেফতারও হয়েছিলেন। নির্ভীকভাবে কাজ করেছেন তিনি, কোনদিন পিছ পা হননি।
Leave a Reply