আজ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের ভোটযুদ্ধে সিনেটে এগিয়ে ডেমোক্র্যাট, হাউসে রিপাবলিকান


আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল আসতে শুরু করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে রিপাবলিকান দলের প্রার্থীরা সংসদের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ যে ফলাফলের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে প্রতিনিধি পরিষদে ১৯৭টি আসন নিয়ে এগিয়ে আছে রিপাবলিকান পার্টি। ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছে ১৭৩ টি। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন হবে ২১৮টি আসন।

প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ হারানোর অর্থ মেয়াদের বাকী সময়টাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করতে বিস্তর বেগ পেতে হবে। তবে সিনেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ৫০ আসনের মধ্যে ৪৮টির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এগিয়ে ডেমোক্র্যাটরা।। আর রিপাবলিকানরা জয় পেয়েছে ৪৭টি আসনে। সিনেটের চূড়ান্ত ফলাফল নির্ভর করছে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের উপর যার পূর্বাভাস এখনো পাওয়া যায়নি। তবে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে যাচ্ছে সেটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। লড়াই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি।

সিনেটের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৫০টি আসন। চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যে চারটি অঙ্গরাজ্যের দিকে সবার চোখ। এগুলো হচ্ছে জর্জিয়া, পেনসিলভানিয়া, অ্যারিজোনা এবং নেভাডা। এই অঙ্গরাজ্যগুলোতে সিনেটর কোন দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তার কোন পূর্বাভাস এখনো পাওয়া যায়নি। ফ্লোরিডার গভর্নর রিপাবলিকান দলের রন ডিসানটিস – ধারণা করা হচ্ছে তিনি তার পদে টিকে যাবেন। এদিকে মারকো রুবিও সিনেটে তার আসনে বহাল থাকবেন বলে ধারণা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়কার হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ হাকাবি স্যান্ডার্স আরকানসাসে জেতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জর্জিয়ার কংগ্রেসওম্যান মারজোরি টেইলর গ্রিন প্রতিনিধি পরিষদে তার আসন ধরে রাখবেন এমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারণায় মুখর ছিলেন এবং ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেন জিতেছেন এটা অস্বীকার করার জন্য খ্যাত। যদি রিপাবলিকানরা মার্কিন সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে, তবে আশা করতে পারেন যে ফেডারেল আদালতে কাজ করার জন্য বাছাই করা লোকদের নিয়োগ নিশ্চিত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাগুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়বে। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) মার্কিন সংসদীয় নির্বাচনটি হোয়াইট হাউসে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট এবং তার দলের ভাগ্য নির্ধারণের পাশাপাশি গোটা জাতির দিকনির্দেশনার ওপর এক বিরাট প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।

মার্কিন কংগ্রেসের আকারে পরিবর্তন ঘটলে তা সারা দেশে আমেরিকানদের দৈনন্দিন জীবনকে সরাসরিভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই নির্বাচনে জো বাইডেনের ওপর কোন ব্যালট হচ্ছে না। তবে প্রেসিডেন্টের মেয়াদের মাঝামাঝি (যে জন্য এর নাম মিড টার্ম ইলেকশন) এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আইনসভা এবং গভর্নরের অফিসগুলোকে কে নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে এই নির্বাচন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড এবং দেশের বর্তমান হালচাল সম্পর্কে পরোক্ষভাবে ভোটারদের মতামত প্রকাশের সুযোগ এনে দেয়। মার্কিন অর্থনীতির বর্তমান সমস্যা এবং অপরাধ ও অবৈধ অভিবাসন নিয়ে ভোটাররা যখন উদ্বিগ্ন, তার মধ্যে নির্বাচনের এই রায় বর্তমান প্রেসিডেন্টের জন্য বেশ কঠোর হতে পারে।

এছাড়াও, এই ফলাফল ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভোটের প্রচারণার ক্ষেত্রকে নানাভাবে প্রভাবিত করবে, বিশেষভাবে সেখানে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোন সম্ভাবনা তৈরি হয়। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে, পেনসিলভেনিয়া, উইসকনসিন এবং মিশিগানের মতো ভোটের চিরাচরিত রাজনৈতিক লড়াইয়ের ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ গভর্নর এবং স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যে ফলাফল উঠে আসতে পারে তার ফলে সেখানে গর্ভপাতের আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে।

প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ কোন দলের হাতে যাবে এবং অঙ্গরাজ্যগুলোতে কোন দল ক্ষমতা লাভ করবে তা গর্ভপাতের ইস্যুটি ছাড়াও অন্যান্য নীতিগুলিকে প্রভাবিত করবে। যদি রিপাবলিকানরা বিজয়ী হয়, তাহলে অভিবাসন, ধর্মীয় অধিকার এবং সহিংস অপরাধ মোকাবেলাকে অগ্রাধিকার দেয়ার প্রত্যাশা করা যেতে পারে।

অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা বিজয়ী হলে, পরিবেশ, স্বাস্থ্যসেবা, ভোটের অধিকার এবং আগ্নেয়াস্ত্রের নিয়ন্ত্রণের মতো ইস্যুগুলো তাদের এজেন্ডায় ওপরের দিকে থাকবে। তবে এবারের সংসদীয় নির্বাচন বিভিন্ন নীতির বাইরের কিছু বিষয়ের ওপরও প্রভাব ফেলবে। প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে সফল হলে বিভিন্ন বিষয়ে সংসদীয় তদন্ত কমিটি তৈরির ক্ষমতা হাতে চলে আসবে।

সূত্র: বিবিসি


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর