ইসমাইল হোসেন স্টাফ রিপোর্টার
বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সীমানায় চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ সেলু মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে কিছু কুচক্রি মহল। বর্ষা, শীত, কিংবা বসন্ত সব মৌসুমে হারবাং ছড়া ও বড় ছিউনী খালে অবৈধ সেলু মেশিন বসিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। এতে নদীর ভাঙনের শিকার হচ্ছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি, বসত বাড়ি। হুমকিতে রয়েছে হাজারও বসত বাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাতামুহুরি নদীতে বয়ে যাওয়া হারবাং ছড়া ও বড় ছিউনী খালের বিভিন্ন অংশে সেলু মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করা হলেও রহস্যজনক কারণে নিরব রয়েছে প্রশাসন।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীসহ সব মহলকে ম্যানেজ করে অনেকটা দাপটের সঙ্গেই লুটের এই মহোৎসবে মেতেছেন প্রভাবশালী বালুদস্যুরা। অনেকটা নির্বিঘ্নেই দিনে-রাতে সমানতালে সেলু মেশিন দিয়ে চলছে ফসলি জমির বুক চিরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এতে করে শতশত হেক্টর কৃষি জমি বিনষ্ট হচ্ছে। ফলে কমতে শুরু করেছে খাদ্য উদ্বৃত্ত।
সরেজমিনে চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের সাবানঘাটা নামক স্থানে হারবাং খালে ও বড় ছিউনী খালে ৮/১০ টি স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নির্বিকারে বালু উত্তোলনের চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, হারবাং খালে ও বড় ছিউনী খালে সেলু মেশিন বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিকারে বালু উত্তোলন করে চলেছে। সিন্ডিকেট তৈরি করে সেলু মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উত্তর হারবাং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, মোঃ জানে আলম, মোহাম্মদ জিয়াবুল, নিজামুদ্দিন, মোঃ মোজাম্মেল, মোহাম্মদ মালেক, আব্দুল মালেক, মোঃ আলমগীর। কৃষি জমি ও বসতভিটাও পড়েছে হুমকির মুখে। পাশপাশি মেশিনের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের মানুষেরা। অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষমতাসীন ব্যক্তি ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে উপজেলার বেশ কিছু স্থানে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ওইসব স্থানে ড্রাম ট্রাক, ট্রাক্টরের সারিবদ্ধভাবে আনা-নেয়ার লম্বা লাইন দেখে যে কারো মনে হবে যেন অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের মহাউৎসব চলছে।
বালু উত্তোলনকারী মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, দল চালানোর জন্য আমাদের ছোটখাটো কিছু করতে হয়। জায়গার মালিকসহ আমরা একটা সিন্ডিকেট তৈরি করে বালু উত্তোলন করে দল চালায়।
হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন মিরাজ বলেন, আমি নিজে অনেকবার অভিযান চালিয়েছি, এসি লেন্ডসহ বেশ কয়েকবাব অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিলো। তারা আবার বালু উত্তোলন করতেছে বিষয়টা আমার জানা নাই, আমি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ানের সাথে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করতে চাইলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
Leave a Reply