মোঃ শোয়াইব,হাটহাজারী প্রতিনিধি
দুই বছরের অধিক সময় পার হলেও দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসার্থে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ট্রমা সেন্টারে এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। সরঞ্জাম ক্রয়, জনবল নিয়োগ কিছুই হয়নি। তবে উদ্বোধনের পর থেকেই করোনা মহামারীতে ভ্যাকসিন প্রদানসহ উপজেলা সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আবাসিকে ভাড়ার বিনিময়ে থাকছেন কিছু চিকিৎসক, নার্স, মিডওয়াইফারি, টেকনিশিয়ান। তবে প্রতি মাসে ৭শ টাকা হারে নার্স ও মিডওয়াইফারি উপজেলা হাসপাতাল নির্ধারিত বিদ্যুত বিল পরিশোধ করলেও চিকিৎসক ও তানিম নামে এক এক্সরে টেকনিশিয়ান বিল পরিশোধ করেন না বলে জানা গেছে। বিল উত্তোলনে দায়িত্বরত ব্যক্তি ক্যাশিয়ার আসমা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অবগত করেও ফলাফল শূন্য।
এদিকে দীর্ঘ দুই বছর ধরে করোনা মহামারির ভ্যাকসিন প্রদান, সংরক্ষণ কাজে ব্যবহার করলেও মাসের পর মাস বকেয়া রেখেছেন বিদ্যুত বিল। গেল মাস পর্যন্ত বকেয়া বিল দাড়িয়েছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা। পিডিবি কর্তৃপক্ষ বার বার বকেয়া পরিশোধে নোটিশ প্রদান করলেও তা পরিশোধ করা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি এখনো ওই সেন্টারের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, বুধবার সকাল ১১ টার দিকে ওই সেন্টারের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। প্রায় ১২ ঘন্টা পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুরোধে পুনঃ সংযোগ দেয়া হয়। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে উদ্বোধনের কয়েক মাস পর থেকেই নার্স, মিডওয়াইফারিসহ চিকিৎসকরা থাকেন ট্রমা সেন্টারের আবাসিকে। বেতন থেকে ভাড়া কর্তন করা হলেও মাসিক ৫শ পরে ৭শ টাকা হারে বিদ্যুত বিল পরিশোধ করেন তারা। প্রতি মাসে বিলের টাকা উত্তোলন করে হাসপাতালের ক্যাশিয়ারের কাছে জমা দেয়া হলেও এক টাকাও পরিশোধ করা হয়নি বিদ্যুত বিল। পরে বাধ্য হয়ে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন করা হয়। ইতিমধ্যে নার্স, চিকিৎসকসহ সবাইকে চলতি মাসেই রুম ছাড়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রশ্মি চাকমা গতকাল দুপুরে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা করোনার সময় বিদ্যুত বিল জমা হয়েছে। এটা সরকারি খরচ। ট্রমার প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেই বরাদ্দের জন্য লিখলেই চলে আসবে। সেন্টারে থাকা নার্সরা হিটার এবং বিভিন্ন ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে অতিরিক্ত বিল জমা করেছে। অথচ তাদের মাসে মাত্র ৭শ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ান বিল না দেয়ার প্রশ্নে বলেন, প্রয়োজন হলে তাদেরও দিতে হবে। দেয়ার সময় তো আছে। নার্সদের বাধ্যতামূলক বৈষম্য নয় কি চিকিৎসকদের সাথে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এটা বৈষম্য কেন হবে। শুরু থেকে উত্তোলন করা বিদ্যুত বিলের টাকা কোথায় জানতে চাইলে বলেন, আমার সময়কালের টাকা একত্র করে ৫১ হাজার ৩শ ৩৬ টাকা বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। আগের কর্মকর্তারা কি করছেন তারা জানেন। তবে সুর পাল্টিয়ে বলেন, সব টাকা মিলিয়ে পাঁচ লাখের ভাংতি টাকাটা পরিশোধ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, শনিবার হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং। সভাপতি (স্থানীয় এম.পি মহোদয়) উপস্থিত থাকবেন। সেখানে এ বিষয় আলোচনা করা হবে।