শুভ মহালয়া আজ, পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের শুরু। একই সঙ্গে শারদীয় দূর্গোৎসবের পুণ্যলগ্নেরও শুরু আজ থেকে। মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দূর্গা আজ পা রেখেছেন মর্ত্যলোকে। বছর ঘুরে আবারও উমা দেবী আসছেন তার বাপের বাড়ি। অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হওয়ার পর চারদিকে শুরু হয় অশুভ শক্তির প্রতাপ। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হন দেবতারা। তখন দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। মহালয়ার সময় ঘোর অমাবস্যা থাকে। তখন দূর্গা দেবীর মহাতেজের আলোয় সেই অমাবস্যা দূর হয়। আর প্রতিষ্ঠা পায় শুভশক্তি।
হিমালয়ের কৈলাশ থেকে সুদূর পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিবছর দূর্গা দেবী আসেন সমতল ভূমির এই বাংলায়। সঙ্গে নিয়ে আসেন গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী আর সরস্বতীকে। প্রতিবছরের শরৎকালে দেবী দূর্গার এই আগমন হয় নিজ ভূমিতে। বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে, এবার দূর্গা দেবী আসছেন গজে, যার অর্থ শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা। উমা কৈলাসে ফিরবেন নৌকায় যার শস্য বৃদ্ধি ও জল বৃদ্ধি।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, দেবী দূর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। মহালয়া দূর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে শারদীয় দূর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই পূজারীরা দূর্গা মায়ের আগমন ধ্বনি শুনতে পাবেন। হিন্দু ধর্মমতে, মহালয়ার দিনে দেব-দেবীকুল দূর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। শাস্ত্রীয় বিধান মতে, মহালয়ার দুটি পর্ব রয়েছে, একটি পিতৃপক্ষ, অন্যটি দেবীপক্ষ। অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের শেষ হয় আর প্রতিপদ তিথিতে শুরু হয় দেবী পক্ষের। আজ মহালয়া দিয়ে আরম্ভ হচ্ছে সেই দেবীপক্ষ।
এদিন গঙ্গাতীরে প্রার্থনা করে ভক্তরা মৃত আত্মীয়স্বজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন। আজ ভোর থেকে সারাদেশে স্থায়ী অস্থায়ী দূর্গা মণ্ডপগুলোতে চণ্ডীপাঠ ও পূজা অর্চনার মাধ্যমে দূর্গা দেবীকে আহ্বান করা হবে। এভাবেই আজ মর্ত্যলোকে, আবাহন ঘটবে দেবী দূর্গার। ভক্তদের কন্ঠে উচ্চারিত হবে, যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা, নমস্ত্যৈ নমস্ত্যৈ নমস্ত্যৈ নমঃ নমঃ।
Leave a Reply