শিহাব উদ্দিন শিবলু, মিরসরাই
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় চলতি বছর ১২৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ করা হচ্ছে। বিভিন্ন কৃষি জমিতে এখন পর্যন্ত ৬৫০ হেক্টর শিম, বাকি ৬০০ হেক্টর জমিতে লাল শাক, পালং শাক, মুলা শাক, বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজির চারা রোপণ করা হয়েছে। শাক সহ কিছু সবজি বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন চাষীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১২৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির আবাদ করেছেন কৃষকেরা। উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার কৃষকরা এখন সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিছু কৃষক ইতমধ্যে সবজি বাজারে বিক্রি শুরু করেছে। তারা ভালো দামও পাচ্ছেন। তবে বেশির ভাগ চাষীর সবজি তুলতে আরো ১৫ দিন সময় লাগতে পারে।
সরেজমিনে উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ১৫ শতক জমির কিছু অংশে চিচিঙ্গা ও তিতা করলা চাষ করেছেন কৃষক রিয়াজ। কিছু অংশে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। একজন কাজের লোক নিয়ে জমিতে সবজির পরিচর্যা করছেন তিনি। রিয়াজ বলেন, এক জমিতে ভাগ করে তিন ধরনের সবজি আবাদ করেছি। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে ভালো ফলনের আশা করছি।
মিরসরাই পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকার কৃষক জামশেদ আলম বলেন, আমাদের তিন ভাইয়ের পেশা কৃষি কাজ। প্রতি বছরের মত এবারও প্রায় এক একর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। লাল শাক, মুলা বাজারে বিক্রি করেছি। ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ অন্যান্য সবজি গাছে ফলন আসতে আরো সময় লাগবে। তিনি আরো বলেন, অন্য জায়গায় শীতকালীন সবজি আরো আগে চাষ করলেও আমাদের এখানে একটু দেরি করে আবাদ করা হয়। যখন পুরোপুরি শীতকাল চলে আসবে তখন সবজি বাজারে নেয়ার উপযোগী হবে। পূর্ব খৈয়াছরা এলাকার কৃষক নাদেরুজ্জামান জানান, তিনি ২২ শতক জমিতে খিরা চাষ করেছেন। সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে লাল শাকের বীজও ফেলেছেন। খিরার আগে লাল শাক বিক্রির উপযোগী হয়ে গেছে। বাজারে লাল শাকের এখন ভালো দাম। প্রতি মুঠো লাল শাক ৪৫-৫০ টাকা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে বাজারে। লাল শাক বিক্রি শেষে খিরার জন্য জৈব সার দেবেন তিনি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম, ‘উপজেলায় চাষ করা শীতকালীন শাক-সবজি এখনো পুরোপুরি বিক্রির উপযোগী হয়নি। চলতি মাসের মাঝামাঝি ও ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পুরোপুরি বাজারে আসবে। আশা করছি কৃষকরা এবার ভালো দাম পাবেন। সবচেয়ে বেশি শীতকালীন সবজি চাষ হয় উপজেলার দুর্গাপুর, খৈয়াছরা, সাহেরখালী ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে।’
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘মিরসরাই উপজেলার মাটি শীতকালীন সবজি চাষের জন্য উপযোগী। অনেক কৃষক আউশ ধান কাটার পর শীতকালীন সবজি আবাদ শুরু করেন। তবে এখানে একটু দেরি করে চারা লাগানো হয়। আবহাওয়া ভালো থাকলে দ্রুত সময়ে শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করবে।’
Leave a Reply