অনলাইন ডেস্কঃ ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মার্ট সেবায় মিউটেশন-খতিয়ান-ট্যাক্সে আরও সহজ পদ্ধতি সংযোজন করা হচ্ছে, এখন থেকে এক লগইনেই এই তিন সেবা।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত সেবাগুলোর মধ্যে স্মার্ট নামজারি, স্মার্ট এলডি ট্যাক্স এবং স্মার্ট খতিয়ান ব্যবস্থা অন্যতম। আরও নতুন যেসব সেবা যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে, তার মধ্যে আছে স্মার্ট এলএ পেমেন্ট, স্মার্ট কেস সিস্টেম, স্মার্ট অভিযোগ সিস্টেম, স্মার্ট এইচআর সিস্টেম, স্মার্ট লিজ সেটেলমেন্ট ও স্মার্ট ম্যাপ।
দেশের ১৬টি জেলা, ৩২টি উপজেলা/সার্কেল ও ৬৪টি ইউনিয়ন/পৌর ভূমি অফিসের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত ১৮০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নে এ স্মার্ট কর্মকৌশল প্রণয়ন করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ভূমি ভবনের কেন্দ্রীয় সেমিনার হলে ‘ভূমি মন্ত্রণালয়ের ১৮০ দিনের স্মার্ট কৌশল বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তাদের স্মার্ট কর্মকৌশল বিষয়ে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
নির্বাচিত ভূমি অফিসের কার্যক্রম নিবিড় তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে ১৮০ দিনের বিশেষ কর্মসূচির কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর একটি টেকসই মডেল দাঁড় করিয়ে এই কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হবে। ১৮০ দিনের কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রাথমিকভাবে যে ১৬টি জেলা, ৩২টি উপজেলা ও ৬৪টি ইউনিয়ন/সার্কেল ভূমি অফিস নির্বাচিত করা হয়েছে তন্মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার আগ্রাবাদ সার্কেল ও আনোয়ারা উপজেলা ভূমি অফিস এবং আগ্রাবাদ ও হালিশহর ভূমি অফিস, খাসখামা ও বটতলী ইউনিয়ন ভূমি অফিস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সহকারী কমিশনার (ভূমি), ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) জিয়াউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান একেএম শামিমুল হক, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সবুর মন্ডল এবং ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স এবং সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার স্মার্ট ভূমিসেবা বাস্তবায়নে গতি আনতে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের নির্দেশে এ বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এই কর্মসূচির আওতায় জনবান্ধব ভূমিসেবা প্রদান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসগুলোকে নিবিড় তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণে আনা হয়েছে।
ভূমি সচিব তার বক্তব্যে জানান, ১৮০ দিনের কর্মকৌশলের অংশ হিসেবে শিগগিরই ল্যান্ড সার্ভিস গেটওয়ের (এলএসজি) মাধ্যমে ২য় প্রজন্মের মিউটেশন, খতিয়ান ও এলডি ট্যাক্সের আন্তঃসংযুক্ত সেবা শুরু করা হচ্ছে। এতে আলাদাভাবে তিনটি সিস্টেমে প্রবেশ না করে, সিস্টেমে একবার লগইন করেই তিনটি সেবা পাওয়া সম্ভব হবে। ফলে মিউটেশন থেকে সরাসরি খতিয়ান যাচাই, মিউটেশনের সঙ্গে সঙ্গে হোল্ডিং নম্বর প্রদান ও ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ সম্ভব হবে। এ ছাড়া ভূমিসেবার সব তথ্য কলের মাধ্যমে জানানোর ব্যবস্থাও থাকছে।
সময়মতো নামজারি নিশ্চিত করা, শতভাগ খতিয়ান ডেলিভারি, সব নামজারি ও সার্ভে খতিয়ান সিস্টেমে আপলোড করার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ প্রদান করেন সচিব। ভূমি সচিব ভূমি কর্মকর্তাদের মসৃণ সেবা দেওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ রাজস্ব বৃদ্ধি এবং হয়রানিমুক্ত ও নাগরিক-বান্ধব প্রত্যাশিত ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে বলেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় যোগাযোগ কার্যক্রমের মাধ্যমে নাগরিকদের যথাসম্ভব ভূমিসেবা সম্পর্কে অবহিত করার ব্যাপারেও পরামর্শ দেন সচিব।
আরও পড়ুন উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে ভূমিকা রাখতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপনাদের সবার চেয়ে অনেক কম বয়সেই ১৯৪৮ সাল থেকেই ভূমির ওপর দেশের সাধারণ মানুষদের ন্যায্য অধিকারের কথা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বলা শুরু করেছিলেন। ১৯৫৩ সাল থেকেই বিভিন্ন জাতীয় আন্দোলনে তিনি ভূমি অধিকারের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর নিয়েছিলেন ভূমি সংস্কার বিষয়ক অনেক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।’
বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে, সর্বোচ্চটুকু দিয়ে, দক্ষ, স্বচ্ছ এবং জনবান্ধব স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পিত স্মার্ট সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য ভূমি কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান ভূমি সচিব।
সচিব এ সময় জানান, ভূমিসেবা প্রদান সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে নিয়মিত মনিটর করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রণালয়ের টিম কাজ করছে।
Leave a Reply