#চান্দগাঁও আবাসিকে পাইলট প্রকল্প
#সেপ্টেম্বরে মাঠ পর্যায়ের বাস্তব কাজ শুরু
#বুয়েট থেকে পরীক্ষিত, আইএমও সার্টিফাইড
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
স্মার্ট মিটারের আওতায় আসছে চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও পয়:নিষ্কাশন কর্তৃক্ষের তিন হাজার গ্রাহক। সংস্থাটির একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় প্রথমে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ২ হাজার ৫শ’ গ্রাহক পাবেন এই স্মার্ট মিটার। এছাড়া বাকি ৫শ’টি মিটার স্থাপিত হবে পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলোতে। চট্টগ্রাম ওয়াসার একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ইউরোপ থেকে লিথ্যুইনিয়া কোম্পানির অ্যাক্সিওমা ব্র্যান্ডের মিটার নিয়ে এসেছে ওয়াসার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এই স্মার্ট মিটার সরবরাহ করছে পদ্মা স্মার্ট টেকনোলজি। থ্রি ফোর সিইউ ইঞ্চি, পার্শ্ব ১ ইঞ্চির এই মিটার অত্যাধুনিক। এটি লোরা গেটওয়ে ভিত্তিতে কাজ করে। লোরা গেটওয়ে নিরাপদ, পরিবেশ বান্ধব, এতে জলের ব্যবহার এবং পরিশোধিত মূল্য দুটোই সাশ্রয় সম্ভব। এই পরিমাপ যন্ত্র অত্যন্ত আধুনিক। মিটারের রিডিং গেটওয়ের মাধ্যমে স্মার্ট মিটারে উঠে এবং সেই তথ্য মিটারটি মূল সার্ভারে নির্ভুল প্রক্রিয়ায় প্রেরণ করে। এই অটোমেশনের মাধ্যমে মিটার রিডিংয়ে ঝামেলা কমছে ওয়াসা কতৃপক্ষের।
এটিকে নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ মনে করছেন নগরবাসী। এ প্রসঙ্গে আলাপকালে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মিসেস তাসমিয়া তুলিন চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘স্মার্ট মিটার স্থাপনের বিষয়টি নিশ্চয়ই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, কিন্তু এক্ষেত্রে মিটার রিডিংয়ে কতৃপক্ষের সুবিধা বাড়বে, গ্রাহকের সুবিধা কতটুকু বাড়বে? বিলের ক্ষেত্রে সাশ্রয় হবে নাকী ব্যয় বাড়বে? এসব প্রশ্নের সমাধান হবে মিটারটা ব্যবহারের পর।’
গ্রাহকদের আরো প্রশ্ন রয়েছে, ‘এই স্মার্ট মিটারের জন্য গ্রাহক থেকে টাকা নেওয়া হবে নাকি ওয়াসা কতৃপক্ষ এর ব্যয় বহন করবে?, এ মিটারের সাথে কী কোনো প্রি-পেইড কার্ড থাকছে?’ ওয়াসা কতৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘মিটারের ব্যয়ভার গ্রাহক নাকী কতৃপক্ষ বহন করবে সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো স্বিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি এবং এই মিটারের সাথে কোনো প্রি-পেইড কার্ড থাকছে না। কেবল বিল প্রদানের জন্য রিডিংয়ের সুবিধার্থে এই মিটার স্থাপন করা হচ্ছে।’
বর্তমানে ৮৬ হাজার কানেকশন আছে চট্টগ্রাম ওয়াসার। পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সফল হলে ধীরে ধীরে সকল গ্রাহক এই পরিষেবার আওতায় আসবেন। মিটারগুলোর ৫ বছর করে ওয়ারেন্টি আছে। যদি কোনো কারণে কোনো যন্ত্র বিকল হয় তাহলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেটি প্রতিস্থাপন করবে।
বর্তমানে ওয়াসার যতগুলো গ্রাহক বা কানেকশন রয়েছে সেগুলোর বিলিং সিস্টেম আধুনিক না হওয়ার কারণে গ্রাহক ও সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান উভয়ই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যারা গ্রাহকের মিটার রিডিং করতে যান তারাও পড়েন দুর্ভোগে। অনেকের মিটার থাকে অন্ধকারাাচ্ছন্ন কিংবা দুর্গম স্থানে। অনেক সময় গ্রাহক বাড়িতে থাকেন না কিংবা কেয়ারটেকার থাকেন না, মিটার রিডাররা ফিরে আসেন। আবার মিটার রিডিংয়ের ক্ষেত্রেও জটিলতা রয়েছে, মিটার দেখে কাগজে লিখে জমা দেওয়া হয় কম্পিউটার সেকশনে। সেক্ষেত্রে অনেক সময় গ্রাহক অভিযোগ করেন বিল বেশি এসেছে। অটোমেশনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় এবং সহজে জল ব্যবহারের পরিমাণ জানা যাবে। বিল দিতেও সুবিধা হবে এবং গ্রাহকের অভিযোগও কমবে। কারণ এটি আইএমও সার্টিফাইড (বাণিজ্যিকভাবে তৈরি সবচেয়ে নির্ভুল জলের মিটার)।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে চট্টগ্রাম ওয়াসার কম্পিউটার শাখার সিস্টেম অ্যানালিস্ট শফিকুল বাশার বলেন, ‘স্মার্ট মিটার স্থাপনের মাধ্যমে ওয়াসা কতৃপক্ষ আরো বেশি গ্রাহক বান্ধব হবে এবং এতে গ্রাহক ও কতৃপক্ষ উভয়ই লাভবান হবে। সকল গ্রাহককে যদি এ ধরনের মিটারের আওতায় আনা যায় সেক্ষেত্রে স্মার্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে ই-গর্ভনেন্সের দিকে চট্টগ্রাম আরো এক ধাপ এগুবে।’
Leave a Reply