সৌদি আরবের পরিবর্তে বাংলাদেশে হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য একটি চুক্তির খসড়া আজ সোমবার (১৪ নভেম্বর) মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘হজযাত্রীদের প্রবেশে সহযোগিতা চুক্তি’ শীর্ষক চুক্তি অনুযায়ী এখন থেকে নিয়মিতভাবে বাংলাদেশেই হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, গত বছর কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এখানে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। এখন থেকে এখানে নিয়মিতভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ব্যাপারে দুই পক্ষ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এটি একটি বড় অর্জন।
বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংক্রান্ত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রতিবেদন পেশ করা হয় এবং মন্ত্রিসভা সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহনের নির্দেশ দেয়। আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যে কোনো মূল্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে মন্ত্রিসভা একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের খাদ্য মজুদ খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে। এটিকে সর্বদা স্থিতিশীল অবস্থানে রাখতে হবে। বেসরকারি খাতকে ইতিমধ্যেই ১৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মন্ত্রিসভা তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে খাদ্য, বিশেষ করে সম্পূরক খাদ্য আমদানি করা থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে।
এছাড়া, মন্ত্রিসভা রেমিট্যান্স প্রবাহ ও এফডিআই বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি অদক্ষ শ্রমিকদের বিদেশের শ্রমবাজারে না পাঠাতে, বরং চাকরির বাজারের চাহিদা অনুযায়ী তাদের প্রশিক্ষণ দিতে বলেছে। ডেইরি দুধের মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ডেইরি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড আইন, ২০২২-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
খসড়া আইন অনুযায়ী, গবাদি পশুর খাদ্য যথাযথ উন্নয়ন বা সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং কুলিং স্টোরেজ সুবিধা প্রদান করা হবে। বৈঠকে চিড়িয়াখানা আইন, ২০২২-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। চিড়িয়াখানাগুলোর যথাযথ ব্যবস্থাপনা এবং সেখানে বন্য প্রাণীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এটি উত্থাপন করা হয়। জাপান, কাতার এবং সৌদি আরবের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হতে যাওয়া তিনটি চুক্তির খসড়াও মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে।
এই চুক্তিগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হবে ‘কাস্টমস ম্যাটারে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তা বিষয়ক চুক্তি’ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও কাতার সরকারের মধ্যে কূটনৈতিক, বিশেষ ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসার প্রয়োজনীয়তা বাতিল সংক্রান্ত চুক্তি’ এবং ‘সৌদি আরব সরকার ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি’। চলতি মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফরে গেলে জাপানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই চুক্তি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ জোরদার করবে।
তথ্যসূত্র: বাসস
Leave a Reply