অনলাইন ডেস্কঃ সরকার পতন আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে রাজনীতির মাঠে একের পর এক কমসূচি দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। অন্যদিকে বিরোধী পক্ষের আন্দোলনে গুরুত্ব না দেয়া নির্ভার আওয়ামী লীগে চলছে আগামী দ্বাদশ নির্বাচনের প্রস্তুতি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, উভয় পক্ষ এখন বহিঃর্বিশ্বের শক্তি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। আ. লীগ যতটা নির্ভার দেখানোর টেষ্টা করছে পরিস্থিতি তার উল্টো। ভেতরে ভেতরে বেশ চাপে রয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। অন্যদিকে বিএনপি রয়েছে উভয় সংকটে। বৈশ্বিক শক্তি সহিংসতার পক্ষে বিএনপিকে সমর্থন দিচ্ছে না। কিন্তু দলটি সরকার পতন আন্দোলনে ভয়ংকর রকম বিক্ষোভ দেখাতে না পারলে নির্বাচন ঠেকানো সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞানের শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের দেশের রাজনীতি বহিঃবিশ্বের শক্তি দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রকে ডিঙ্গিয়ে আ. লীগের পক্ষে থাকবে না ভারত। বানিজ্যিক শক্তির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিযোগীতা চলছে চীনের। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই তিনটি দেশের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তবে সকল চাপ উপেক্ষা করে দ্বাদশ নির্বাচন করে ফেলতে চাইবে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলো সহিংসতার পক্ষে সমর্থন দিচ্ছে না বিএনপিকে। নৈতিক হাইগ্রাউন্ডে থাকতে চাওয়া দলটি এখন উভয় সংকটে পড়েছে। রাজপথে আন্দোলন ভয়ংকর করতে না পারলে নির্বাচন ঠেকানো সম্ভব হবে না।’
আরও পড়ুন ‘এক দফা’
এদিকে চট্টগ্রামে সমাবেশের মাধ্যমে বিস্মিত হওয়ার মতো জনসমর্থন দেখিয়েছে বিএনপি। পরবর্তী কর্মসূচি দেয়া হয়েছে ঢাকায়। দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ছাড়াই সরকার বিরোধী জনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেকটা সফল হয়েছেন বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এক্ষেত্রে বিদেশে অবস্থান করলেও দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় ভূমিকা রাখছেন তারেক জিয়া।
সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে ঢাকাকে ঘিরেই চূড়ান্ত পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বিএনপি। সারা দেশে নানা কর্মসূচি শেষে রাজধানীকে আন্দোলনের কেন্দ্রে পরিণত করতে চায় দলটি। এজন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আগামি ১৮ অক্টোবর ঢাকায় জনসমাবেশ থেকে সরকারকে আলটিমেটাম দেওয়া হতে পারে। বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
চট্টগ্রামের জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ এরকম ইঙ্গিতই দিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘সরকার পদত্যাগ না করলে শেষ কর্মসূচি দেওয়া হবে। অনেক রোডমার্চ করেছি, সমাবেশ করেছি। এরপর রোডমার্চ নেই, সমাবেশও নেই। সব কর্মসূচি হবে রাজধানী ঢাকায়। এবার রাজধানীর পতন ঘটাতে হবে।’ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবার) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি সংলগ্ন নেভাল মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে আমীর খসরু বলেছেন, ‘রোডমার্চে দেশের মানুষ সরকারকে শেষ বার্তা দিয়েছে। এই বার্তা যদি শেখ হাসিনা বুঝতে না পারে, তাহলে আগামী দিনে আওয়ামী লীগের দুর্ভাগ্য আছে।’
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির রাজনৈতিক আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি তো বারবার তারিখ দিয়েই যাচ্ছে। তারা আন্দোলন করুক। জনগণের জানমালের কোনো ক্ষতি যদি করা হয়, সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’
Leave a Reply