আজ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় ব্যবধানে বাংলাদেশের হার


স্পোর্টস ডেস্ক

আত্মহুতি বোধকরি এভাবেই দিতে হয়। চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হার ছিল সময়ের ব্যাপার। তবে ক্রিজে ছিলেন শেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটার মেহেদি হাসান মিরাজ এবং অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। দুজনেই বিগ শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। এরপরে বাংলাদেশের জন্য খুব বড় কোনো প্রত্যাশা ছিল না। অলৌকিকতার গল্প বাংলাদেশের ক্রিকেটে খুব বেশি আসেনি। চেন্নাইতেও হলো না। ২৩৪ রানে অলআউট হলো বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে রানের নিরিখে সবচেয়ে বেশি ব্যবধানের হারের লজ্জা জুটল টাইগারদের।

শেষ উইকেট পেয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। ২৮০ রানের এই জয়ের পর খুব একটা উচ্ছ্বাস ছিল না ভারতীয় শিবিরে। যেন এটাই হওয়ার ছিল। মূলত দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ইনিংস ১৪৯ রানে শেষ হওয়ার পরেই নিশ্চিত হয়ে যায় চেন্নাই টেস্টের ভাগ্য। পরের দিনগুলোতে সেটারই পূর্ণতা এলো। রানের বিচারে ভারতের কাছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার ছিল ২০৮ রানে। চেন্নাইয়ে সেই লজ্জাটাও ঢাকতে পারলো না টাইগাররা।

১৫৮ রানে চার উইকেট থেকে শুরু বাংলাদেশের চতুর্থ দিন। প্রথম ঘণ্টায় উঠল ৩৬ রান। এরপর সাকিব আল হাসান ফিরলেন অশ্বিনের বলে। ১০ বলে ১ রান করে জাদেজার বলে আউট হলেন লিটনও। এই প্রতিবেদন পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ৮ উইকেট হারিয়ে ২২২ রান। চেন্নাই টেস্ট জিততে বাংলাদেশের দরকার আরও ২৯৩ রান। ভারতের দরকার মোটে ৩ উইকেট।

দিনের শুরুতে দেখেশুনেই খেলছিলেন দুই অপরাজিত ব্যাটার সাকিব ও শান্ত। রবীন্দ্র জাদেজার বলে ক্রিজের বাইরে এসে মারতে গিয়ে মিস করেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু ভারতের উইকেটকিপার ঋষভ পন্ত বল গ্লাভসে নিতে পারেননি। অনেক বাইরে চলে আসা সাকিব সময় পেয়ে পৌঁছে যান ক্রিজে।

অবশ্য ভাগ্যকে পাশে পেয়ে কাজে লাগান হয়নি সাকিবের। চতুর্থ দিনে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসে উইকেট পেয়ে যান অশ্বিন। পানি পানের বিরতির পর চতুর্থ বলে সাকিব আল হাসানকে ফিরিয়েছেন এই স্পিন উইজার্ড। অশ্বিনের বলটি সোজা ব্যাটে ঠেকিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু ব্যাটের ওপরের অংশে লেগে প্যাড ছুঁয়ে চলে যায় জয়সাওয়ালের হাতে।

অশ্বিন করেছেন, জাদেজাই বা বসে থাকবেন কেন। ঠিকই বাংলাদেশের ইনিংসে আঘাত হানলেন রবীন্দ্র জাদেজা। তিনি ফিরিয়েছেন লিটন দাসকে। টাইগার উইকেটকিপার ব্যাটার সামনে এসে খেলতে গিয়ে বল ঠিকভাবে ব্যাটে পাননি। বল ব্যাটে হালকা ছোঁয়া দিয়ে চলে যায় স্লিপে রোহিত শর্মার হাতে।

এরপর অনেকটা আত্মাহুতি দিয়েছেন মিরাজ ও শান্ত। অশ্বিনকে উড়িয়ে খেলতে চেয়ে উইকেট হারান মিরাজ। ৮২ রান করার পর জাদেজাকেও একইভাবে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট অধিনায়ক শান্ত। আগের দুজনের পথ ধরেছেন তাসকিন আহমেদও। বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটা ব্যাটে-বলে ঠিকভাবে হয়নি। মোহাম্মদ সিরাজ নিলেন ক্যাচ।

আর শেষ উইকেট নিলেন জাদেজা। ৪ উইকেটে ১৯৪ থেকে ২৩৪ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮২ রান করেছেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত। ভারতের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬ উইকেট নিয়েছেন অশ্বিন। জাদেজা নিয়েছেন ৩ উইকেট, বুমরা একটি।

যদিও টেস্টের প্রথম দুই সেশন ছিল একান্তই বাংলাদেশের। ১৪৪ রানে ৬ উইকেটে তুলে নেয়ার পর ভারতকেই চাপে রেখেছিল বাংলাদেশ। তবে অশ্বিনের ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ শতক, জাদেজার সঙ্গে ১৯৯ রানের জুটিতে ভারত ঠিকই ঘুরে দাঁড়ায়। ৩৭৬ রানে থামে ভারতের প্রথম ইনিংস। বিপরীতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে মাত্র ১৪৯ রানেই আটকে ফেলে ভারতের বোলিং লাইনআপ। বুমরাহ-সিরাজ ও আকাশ দীপের গড়া পেস লাইনআপ শিকার করে ৮ উইকেট।

দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের হয়ে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ঋষভ পান্ত ও শুভমান গিল। তাদের জোড়া সেঞ্চুরির সুবাদে ৪ উইকেটে ভারত তোলে ২৮৭ রান। বাংলাদেশের সামনে টার্গেট ৫১৫। চতুর্থ ইনিংসে জেতার জন্য ইতিহাস গড়তে হতো শান্ত-সাকিবদের। সেটা অবশ্য হয়নি। ২৩৪ রানেই শেষ বাংলাদেশের চতুর্থ ইনিংসের যাত্রা।

 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর