আজ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

এলএনজি অবকাঠামো ব্যবহারে এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ


উচ্চমূল্যের কারণে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) অবকাঠামো ব্যবহারে এশিয়ার অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরও আরো দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে চুক্তি করতে যাচ্ছে তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদের রাষ্ট্রায়ত্ব  নিয়ন্ত্রক সংস্থা পেট্রোবাংলা। গ্যাস সংকটে এ ধরনের অবকাঠামোর প্রয়োজন না থাকলেও টার্মিনাল নির্মাণে তৎপর হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান এক্সিলারেট এনার্জি এবং এ খাতের স্থানীয় কোম্পানি সামিট গ্রুপ।

জ্বালানির আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস’ (আইইইএফএ) বলছে, উচ্চমূল্যের কারণে এলএনজি অবকাঠামো ব্যবহারে এশিয়ায় সবচেয়ে নিম্ন স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। সংস্থাটির তথ্যে চীন, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ২০২১ ও ২০২২ সালের এলএনজি টার্মিনাল ব্যবহারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে বাংলাদেশ এলএনজি টার্মিনাল সক্ষমতার ৫০ শতাংশই ব্যবহার করতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলএনজি সরবরাহে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট সক্ষমতার দুটি ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) বা ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। আমদানি সংকটের কারণে এরই মধ্যে টার্মিনাল দুটির সরবরাহ সক্ষমতা নেমেছে ৫০ শতাংশের নিচে।

জ্বালানি বিভাগের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এক্সিলারেট এনার্জি পটুয়াখালীর পায়রায় এবং সামিট কক্সবাজারের মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এরই মধ্যে এ টার্মিনাল নির্মাণে আর্থিক ও বাণিজ্যিক বিষয়গুলো নিয়ে দরকষাকষি চলছে পেট্রোবাংলার সঙ্গে। টার্মিনাল নির্মাণে শর্ত, অর্থনৈতিক দিক এবং চুক্তির নানা বিষয় বিশ্লেষণ চলছে। এরপর একটা পর্যায়ে পৌঁছালে নির্মাণ চুক্তির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

প্রসঙ্গত, মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই পেট্রোবাংলার সঙ্গে চুক্তি করে এক্সিলারেট এনার্জি। মাল্টিন্যাশনাল এ কোম্পানিটি নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের নিবন্ধিত। ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ শুরু করে কোম্পানিটি। ১৫ বছর মেয়াদি এ টার্মিনাল নিয়ে চুক্তি রয়েছে ২০৩২ সাল পর্যন্ত। তবে এক্সিলারেট এনার্জি সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে এ টার্মিনাল চুক্তির মেয়াদ ২০৩৮ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। একই রকম চুক্তিতে মহেশখালীতে ভাসমান টার্মিনালে কাজ করছে স্থানীয় জ্বালানি খাতের কোম্পানি সামিট গ্রুপ। ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিলের চুক্তি অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল গ্যাস সরবরাহ শুরু করে কোম্পানিটি। এ টার্মিনালের মেয়াদ রয়েছে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত। দুটি টার্মিনাল মেয়াদ শেষে কোনো ধরনের চার্জ গ্রহণ ব্যতীত পেট্রোবাংলার কাছে হস্তান্তর করবে বলে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস লিমিটেড (আরপিজিসিএল) সূত্রে জানা গেছে।

কিন্তু এলএনজি টার্মিনাল ব্যবহারে পুরো সক্ষমতা ব্যবহার হোক কিংবা বসে থাক, দুটি কোম্পানিকেই খরচ দিতে হচ্ছে পেট্রোবাংলাকে। গত তিন বছরে ফিক্সড কস্ট হিসেবে এক্সিলারেট এনার্জি কোম্পানিকে দিতে হয়েছে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৯ হাজার ডলার। আর সামিট গ্রুপ পেয়েছে প্রায় ২৪ কোটি ৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

তথ্যসূত্র: বণিক বার্তা


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর