আজ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছে আওয়ামী লীগ


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যুদ্ধ ও সংঘাতময় সম্পর্ক পরিহার করে বন্ধুত্বপূর্ণ-মানবিক সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশ গড়ার প্রত্যয়দীপ্ত ভাষণ দেওয়ায় এ অভিনন্দন জানায় দলটি।
সম্প্রতি দলের সাধারন সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই অভিনন্দন জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এদেশের জনগণের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি কল্যাণকর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বাঙালি জাতির স্বাপ্নিক নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত ভাষণেও তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে। বিশ্বনেতৃবৃন্দের সামনে সফল রাষ্ট্রনায়কোচিত বার্তা ও দিক-নির্র্দেশনা তুলে ধরায় শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিবাদন।’
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনা বিশ^নেতৃবৃন্দের সামনে দুর্যোগের সঙ্কটপূর্ণ সময়ে সমাধানের সূত্র তুলে ধরেছেন। যুদ্ধ, অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, ক্ষমতার প্রভাব এবং স্বার্থগত সংঘাতকে বিশ^শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবমুক্তির প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি জবরদস্তিমূলক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরীপন্থা পরিহার করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট ও বিরোধ নিষ্পত্তির মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার এই আহ্বান বিশ^শান্তি ও মানবমুক্তির দিকদর্শন। প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণে বিশে^র শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার মর্মবাণী প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বরাবরের মতো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথে জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ প্রদান করেছেন এবং বিশ^শান্তি প্রতিষ্ঠায় পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তাররোধসহ সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের উপর জোর তাগিদ দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘শুধু বর্তমান সঙ্কট সমাধানের বার্তাই নয় বরং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবী প্রতিষ্ঠার দিক-নির্দেশনা থাকায় বঙ্গবন্ধুকন্যার এই ভাষণে বিশ^সভায় বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিপর্যস্ত মানবিকতা রক্ষায় ২০১৭ সালে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে বিশ^মানবতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এই সঙ্কট সমাধানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মাতৃভূমি রাষ্ট্র মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিবাদমান এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক এবং জাতিসংঘসহ অন্যান্য অংশীজনদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে জোর প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। তারপরও এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার আশু সমাধান না হলে এই পরিস্থিতি থেকে উগ্রবাদের ভয়াবহ উত্থান ঘটতে পারে যা উপমহাদেশসহ বৈশি^ক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার উপর মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে মর্মে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে সতর্ক করেছেন। একই সাথে তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশ^নেতৃবন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি থেকে উত্তরণে টিকা প্রদান করায় বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থা ও এর কোভ্যাক্স ব্যবস্থা এবং সহযোগী দেশসমূহকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের গৃহীত সময়োপযোগী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেছেন। একই সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি থেকে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য জলবায়ু নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া আর ভাঙার দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিশ্বনেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জাতিসংঘে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জ্ঞানভিত্তিক উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গেড়ে তোলার প্রত্যয় বাঙালি জাতিকে উদ্দীপ্ত করেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ইতোমধ্যেই বিশ^সভায় স্বীকৃত এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যার বলিষ্ঠ ও ভিশনারি নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছি। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ, কল্যাণকর ও নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যার অন্তর্নিহিত লক্ষ্য হলো- বাংলাদেশকে জলবায়ু-সহিষ্ণু ব-দ্বীপে রূপান্তরিত করা।
সূত্র : বাসস


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর