চাটগাঁর সংবাদ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলাসহ অন্যান্য বন্যা কবলিত এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি খাদ্য সংকটও রয়েছে।
প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য থেকে জানা গেছে, সাতকানিয়া, বান্দরবান, চকরিয়ার যেসব স্থানে আগে কখনও পানি ওঠে নাই এবার সেসব স্থানেও পানি উঠেছে।
বন্যা কবলিত অধিকাংশ এলাকা তিন থেকে চারদিন আগে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সে কারণে ওইসব এলাকার মানুষের যোগাযোগ মাধ্যম মুঠোফোনের চার্জও ফুরিয়ে গেছে। সড়কে পানি ওঠার পাশাপাশি বেশ কিছু সড়ক ভেঙ্গে গিয়েছে। কিছু কিছু এলাকার তথ্য নৌকায় চড়ে গিয়ে জানা গেছে।
সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। পুরো উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। উপজেলার পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকার মূল সড়ক পানির নীচে তলিয়ে গেছে। সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও থানা কম্পাউন্ডে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা ও প্রশাসনিক সেবা।
এদিকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বন্যা মোকাবেলার জন্য চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলা প্রশাসনের কাছে সহায়তা চাওয়ার সুযোগ অধিকাংশ মানুষের নেই। কারণ যেসব এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে সেসব এলাকায় কারও মুঠোফোনের চার্জ নেই। তাই যেভাবে হোক বন্যাকবলিত এলাকা গুলোতে ত্রাণ, স্বাস্থ্য সেবা ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট পৌছানো জরুরি।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে সাতকানিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষক রুহুল আমিন চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘এখানে গত চারদিন আগে থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছি। মুঠোফোনে চার্জ নেই। তাই কোনো জায়গার খবর পাচ্ছিও না দিতেও পারছিনা। নৌকা বা জলযান ছাড়া এখন চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না।’
সাতকানিয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘প্রায় ১৭টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সব ইউনিয়নে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে পানিবন্দি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের খাবার পানি, শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের ইউনিয়নভিত্তিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা পর্যবেক্ষণ করছেন।’
উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শন করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য শুকনা খাবার ও ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।’
Leave a Reply