আজ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সাড়ে ৭ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে রিলায়েন্স


ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানি এবার মনোযোগ দিতে যাচ্ছেন পরিবেশবান্ধব জ্বালানির দিকে। অর্থাৎ জ্বালানি, ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রাকৃতিক গ্যাস, টেলিকমিউনিকেশন, গণমাধ্যম এবং টেক্সটাইলের মতো ব্যবসায় সফলতার পর তার মালিকানাধীন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের পরবর্তী উদ্যোগ হতে যাচ্ছে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি। ভারতে মুকেশ আম্বানির যেসব ব্যবসা আছে, সেগুলোর বেশির ভাগের দায়িত্বই সন্তানদের ওপর ন্যস্ত করেছেন তিনি। ফলে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবসায় পূর্ণ মনোযোগ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার। খবর বিজনেস ইনসাইডার।

প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী গিগাফ্যাক্টরি ও ব্লু হাইড্রোজেন তৈরির কারখানা নির্মাণের বিষয়গুলো তত্ত্বাবধান করবেন মুকেশ আম্বানি। সেই সঙ্গে অধিগ্রহণ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনাও করবেন তিনি। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে গত বছর এক ঘোষণায় এশিয়ার দ্বিতীয় শীর্ষ এ ধনী জানিয়েছিলেন, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতে তিনি সাড়ে ৭ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চান। মুকেশ আম্বানির বিষয়ে প্রচলিত আছে যে তিনি যখন কোনো কাজে মনোযোগ দেন সেটি একাগ্রতার সঙ্গে পালন করেন। ১৯৯০ সালে তিনি মাসের পর মাস জাহাজে পণ্য পরিবহনকারী কনটেইনারের মধ্যে দিন কাটিয়েছেন। যার ফল হিসেবে দুই দশক পর এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেট্রোকেমিক্যাল পরিশোধনাগারের মালিক তিনি। একাগ্রতার সঙ্গে শুরু করা টেলিকম কোম্পানিটিও এ মুহূর্তে ভারতে খাতভিত্তিক সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান।

এ মুহূর্তে তার গড়ে তোলা বেশির ভাগ ব্যবসা পরিচালনা করছেন তিন সন্তান। এর মধ্যে বড় ছেলে আকাশ আম্বানি রিলায়েন্স জিওর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন, জমজ দুই সন্তানের একজন ইশা আম্বানি রিলায়েন্সের খুচরা ব্যবসার দেখভাল করেন এবং আরেকজন অনন্ত আম্বানি দেখছেন জ্বালানি খাতটি।

২০৩৫ সালের মধ্যে জিরো কার্বন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি ডলার বাজারমূল্যের রিলায়েন্স। আর সে কারণেই নিজের পূর্ণ মনোযোগ মুকেশ আম্বানি এখন নিবদ্ধ করেছেন পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতে। সূত্র বলছে, ভারতের জ্বালানি খাতে কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে রিলায়েন্স গ্রুপ। সেই সঙ্গে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনাও চলছে।

গত আগস্টে শেয়ারহোল্ডারদের এক বৈঠকে মুকেশ আম্বানি বলেছিলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ভারতের স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কাজ করার দারুণ সুযোগ রয়েছে রিলায়েন্সের সামনে। এটি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যাবে যার রেশ কয়েক দশক বিরাজ করবে।

পরিবেশবান্ধব ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ৭ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুকেশ। যার মাধ্যমে তিনি এ খাতে বিশ্বে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠতে পারেন। এ লক্ষ্য পূরণে নিজের বিনিয়োগের পাশাপাশি বিশ্বের বড় বড় বিনিয়োগকারীর সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ করছেন মুকেশ। ভারতের জ্বালানি খাতে তাদের বিনিয়োগের সম্ভাব্য সুযোগ-সুবিধার কথাও তিনি তুলে ধরছেন। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিনিয়োগকারীরা যেন ভারতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করেন সেজন্য তাদের কাছে প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে।

ভাষান্তর: বণিক বার্তা


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর