আজ ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে: শেখ হাসিনা


জনগণের কাছে প্রত্যাখাত হয়ে বিএনপি এখন অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে, স্বাধীনতা ও উন্নয়ন বিরোধী এই গোষ্ঠী এখন দেশে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে তার এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও বেতার কেন্দ্রগুলো সম্প্রচার করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ যখন নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, সে সময় স্বাধীনতা এবং উন্নয়ন বিরোধী একটি গোষ্ঠী অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এদের অতীত ইতিহাস দেখুন। এদের একটা অংশ শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেই ক্ষান্ত হয়নি, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে তারা মানুষ হত্যা করেছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান এদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে। পুনর্বাসিত হয়ে এরা আবার হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, আরেকটি দল যার জন্ম ও লালন-পালন সেনানিবাসে, সেই দলটির হাতে শুধুই রক্তের দাগ। এর প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জাতির পিতার হত্যা-ষড়যন্ত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। উর্দি গায়ে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সশস্ত্র বাহিনীর হাজার হাজার দেশপ্রেমিক সৈনিক এবং অফিসারকে হত্যা করেছে। এদের প্রত্যক্ষ মদদে হরকাতুল জিহাদ, বাংলাভাই, জমায়িতুল মোজাহিদিন ইত্যাদি জঙ্গি সংগঠন গড়ে উঠে। ২০০৪ সালের ২১-এ আগস্ট শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে গ্রেনেড হামলা করে আমাকে এবং আমার দলের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করতে চেয়েছিল। আমি বেঁচে গেলেও সেদিন ২৪ জন নেতাকর্মী মারা যায়। ২০০৫ সালের ১৭ই আগস্ট সারা দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে ৫০০-এর বেশি স্থানে বোমা হামলা চালায়।

২০১৩ সালে সারা দেশে বিএনপি-জামাত অগ্নি এবং পেট্রোল বোমা সন্ত্রাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে যা ২০১৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে- এই তথ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সময় তাদের পেট্রোল বোমা হামলায় ৫০০ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয় এবং তিন হাজার ১৮০ জন দগ্ধ হয়। দগ্ধ শরীরের যন্ত্রণা আজও অনেকেই বয়ে বেড়াচ্ছেন। এ সময় বিএনপি-জামাত জোট সন্ত্রাসীরা হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধবংস করে। এদের হামলায় সাড়ে তিন হাজার বাস-ট্রাক, ২৯টি ট্রেন, ৯টা লঞ্চ পুড়ে ধ্বংস হয়। ৭০টি সরকারি অফিস ও স্থাপনা ভাঙচুর করে এবং ছয়টি ভূমি অফিস সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, বিএনপি’র শীর্ষ নেত্রী এতিমখানার অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। আরেক শীর্ষ পলাতক নেতা অর্থপাচার, দশ-ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। সাধারণ জনগণ কেন তাদের ভোট দিতে যাবেন?

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের ওপর আস্থা হারিয়ে বিএনপি-জামাত এখন বিদেশিদের কাছে দেশের বদনাম করার জন্য কিছু ভাড়াটিয়া লোক নিয়োগ করেছে। পাচারকৃত অর্থ ব্যবহার করছে আর দেশের বদনাম করে বেড়াচ্ছে।

বিএনপি ২০০৬ সালে এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারসহ ভোটার তালিকা করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টা চালায় দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি’র দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও দুঃশাসনের কারণে দেশে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি হয় এবং নির্বাচন বাতিল হয়ে যায়। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। ৩০০ আসনের মধ্যে তারা মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল। একইভাবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জনগণ বিএনপি-জামায়াত জোটকে ভোট দেয়নি। জনগণের দ্বারা প্রত্যাখাত হয়ে তারা এখন অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত রয়েছে। সে কারণেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকলে কোনোদিনই বাংলাদেশ এত উন্নতি করতে পারতো না। উন্নয়নশীল দেশ হতে পারতো না। এখন, জনগণকেই বেছে নিতে হবে তারা কী চান – উন্নত মর্যাদাশীল জীবনের ধারাবাহিকতা না বিএনপি-জামায়াত জোটের দুর্বৃত্তায়নের দুর্বিসহ জীবন।

তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর