আজ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনের বাবা

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন হত্যার বিচার চেয়েছে তার পরিবার


বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন হত্যার বিচার চেয়েছে তার পরিবার। আজ মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শেখ ফরহাদ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করার পর ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন বলেন, ‘শত্রুতার কারণে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। ওর লাশের সঙ্গে মানিব্যাগ, মোবাইল ও ঘড়ি সবই পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। তিনিও সন্তানের মা, তিনি বোঝেন, সন্তান হারালে কীভাবে একটা পরিবারের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। মেধাবী ছাত্রদের এভাবে মেরে ফেললে দেশের ভবিষ্যৎ কি দাঁড়াবে? ২৫ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তোলা স্বপ্ন আমার, আজ হত্যাকাণ্ডের শিকার।’ ছেলেকে হারিয়ে এভাবেই নিজের কষ্টের কথা জানান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের বাবা কাজী নূর উদ্দিন রানা।

এর আগে ডা. শেখ ফরহাদ জানান, নিখোঁজের দুই দিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তার মাথার বিভিন্ন অংশে একাধিক আঘতের চিহ্ন ও বুকের ভেতরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হতে পেরেছি, এটি নিশ্চিত হত্যাকাণ্ড। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী ফারদিনের পুরো ময়নাতদন্ত শেষে আমরা প্রতিবেদন দ্রুততম সময়ে দিয়ে দেব।

উল্লেখ্য, রাজধানীর ডেমরা থেকে নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন পরে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পরে পকেটে থাকা মোবাইল ফোনের সিম দিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনের মরদেহ শনাক্ত হয়। সোমবার (০৭ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম। এর আগে শনিবার (০৫ নভেম্বর) পরিবারের পক্ষ থেকে রামপুরা থানায় নিঁখোজের একটি জিডি করা হয়।

ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, গত ০৫ নভেম্বর ফারদিনের বাবা থানায় হাজির হয়ে ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তার ছেলে ফারদিন বুয়েটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ৩য় বর্ষের ছাত্র। গত ৪ নভেম্বর ৩টার দিকে তিনি ফারদিন নিজ ভাড়া বাসা কোনাপাড়া ডেমরা থেকে বুয়েট হলের উদ্দেশে বের হয়। গত ০৫ নভেম্বর সকাল ১০টায় বুয়েটে তার একটা পরীক্ষা ছিল। কিন্তু তিনি জানতে পারেন যে ফারদীন সেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি।

তারপর ফারদীনের মেয়ে বন্ধু বুসরার সাথে কথা বলে জানতে পারেন যে, ফারদিন তার সঙ্গে রিকশা করে এসে রামপুরা ট্রাফিক বক্সের সামনে নেমে যায়। এর পর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে রামপুরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ওসি আরও জানান, জিডি হওয়ার পর থেকে রামপুরা থানা পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়র্টার্স, আইএডি ও ডিবির বিভিন্ন অফিসার একনিষ্ঠভাবে তদন্ত শুরু করে। পরে সোমবার বিকেল ৫টার দিকে রামপুরা থানা থেকে ফারদিনের নম্বরে ফোন করলে রিং হয়। অপর প্রান্তে নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ-পুলিশের (এসআই) মো. মনির হোসেন ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান যে, সেই নম্বরটি একটা মরদেহের পকেটে থাকা মোবাইলের সিম। তাৎক্ষণিক মরদেহটির ছবি পাঠাতে বলা হলে ভিকটিমের মেজ ভাই তাজিম (২১) ছবি দেখে ফারদিনকে শনাক্ত করেন। অতঃপর বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। জিডি তদন্ত সংশ্লিষ্ট কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রামপুরা থানা পুলিশের কাছে আছে বলেও জানান ওসি রফিকুল ইসলাম।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর