পবিত্র ইস্টার সানডে, যীশুর পুনরুত্থান দিবস


অনলাইন ডেস্কঃ খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের পবিত্র উৎসব ইস্টার সানডে আজ। এদিন যিশুখ্রিষ্টের পুনরুত্থান হয়েছিল। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হলো ক্রিসমাস বা বড়দিন, আর ঠিক এর পরের উৎসব হলো ইস্টার। গুড ফ্রাইডের পরে রোববার হলো ইস্টার সানডে।

খ্রিষ্টধর্মগ্রন্থ বাইবেলের দুটি অংশ রয়েছে। এক অংশ হলো ওল্ড টেস্টামেন্ট, যেখানে আগের নবীদের কিতাবের লেখাগুলো আছে। আরেক অংশ হলো নিউ টেস্টামেন্ট, যেখানে সাধু লুক, মার্ক, জন আর ম্যাথিউ লিখেছেন যিশুর জীবনী। এ ছাড়া আছে যিশুর সঙ্গীদের কাজকর্ম ও ধর্মপ্রচারের কাহিনি, আছে ভবিষ্যদ্বাণী।

চার সেন্টের (সাধু) লেখা জীবনী (গসপেল নামে পরিচিত) থেকে যিশুর জীবনের বিবরণ জানা যায়। জুদাহ প্রদেশের জেরুজালেমের পূর্ব দিকে বেথলেহেমের গোয়ালঘরে যিশুর জন্ম হয়েছিল। রাখালেরা হয় তার সাক্ষী। পূর্বদেশ থেকে তিন জ্ঞানী তাঁর জন্য উপহার নিয়ে আসেন। যিশুর আসল নাম ছিল ইয়েশোয়া। ৩০ বছর বয়সে তিনি ধর্মপ্রচার শুরু করেন। খ্রিষ্টধর্মে পিতা, পুত্র আর পবিত্র আত্মা এই তিন রূপে ঈশ্বর প্রকাশিত হন। এই তিনে মিলে একজন। স্বর্গীয় পিতা বলতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে বোঝায় আর পুত্র যিশু হলেন মানবরূপে ঈশ্বরের বহিঃপ্রকাশ। তাই যিশু একই সঙ্গে ঈশ্বর আর ঈশ্বরপুত্র।

আরও পড়ুন সান্তা ক্লজ ও ক্রিসমাস ট্রির ইতিহাস

শুক্রবার যিশুকে ক্রুশে চরানো হয়। অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে দুপুরের পর তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। এই কষ্টকে বলা হয় ‘প্যাশন অব ক্রাইস্ট’। যিশু আত্মাহুতি দেন মানবজাতির পাপমোচনের জন্য। সবার পাপ তিনি নিয়ে নেন। শুক্রবারের এই করুণ ঘটনার কারণে দিনটি ‘গুড ফ্রাইডে’ নামে পরিচিত। তাঁকে শায়িত করা হয় এক শিষ্য জোসেফ অব আরামাথিয়ার কবরে। তাঁর লাশ তেল আর সুগন্ধিতে মাখিয়ে কবরে শায়িত রাখা হয়। এরপর কবরের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোববার দিন দেখা গেল কবরের মুখ খোলা, পাথর সরানো, যিশুর লাশ নেই, কাফন আলাদা করে পাশে রাখা। যিশু জীবিত হয়ে উঠেছেন। তবে রোববার দিন যিশু পুনরুত্থিত হওয়ায় এই রোববার খুব গুরুত্ববাহী খ্রিষ্টানদের জন্য। একেই ইস্টার সানডে বলে। এ ছাড়া মন্ডি থার্সডেও পালন করা হয়, যে বৃহস্পতিবার যিশু শিষ্যদের সঙ্গে শেষ খেয়েছিলেন, যা ‘দ্য লাস্ট সাপার’ নামে পরিচিত।

তাঁর এই নতুন জন্মকে স্মরণ করে ‘ইস্টার সানডে’ পালিত হয়। ‘ইস্টার’ শব্দটির উৎপত্তি জার্মান ‘ইয়োস্ত্রি’ বা ‘ইয়োস্ত্রে’ শব্দ থেকে। ইয়োস্ত্রে একজন প্যাগান দেবীর নাম। যিনি নবজন্ম এবং উর্বরতার দেবী। তাঁর প্রতীক হলো ডিম। খ্রিষ্টানরা ডিমের গায়ে লাল রং মেখে স্মরণ করে যিশুর রক্ত ঝরাকে। আর ভেতরে ফাঁপা ডিম যিশুর শূন্য কবরের রূপক। কালক্রমে ডিমের গায়ে কারুকাজ করে। একে ইস্টার এগ বলে। উপকথা আছে যে ইস্টার বানি বা খরগোশ ঝুড়িতে করে এই ইস্টার এগ উপহারগুলো দিয়ে যায় শিশুদের, ঠিক যেমনটা সান্তা ক্লজ ক্রিসমাসের উপহার দিয়ে যায়।

তথ্যসূত্র: প্রথম আলো


Related posts

চন্দনাইশে ৮ কেজি গাঁজাসহ মাদককারবারি ইমাম আটক

Mohammad Mustafa Kamal Nejami

পাইকারি দামে গাঁজা কেনেন স্বামী, খুচরা বেচেন স্ত্রী

Chatgarsangbad.net

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে পটিয়ায় মানববন্ধন

Chatgarsangbad.net

Leave a Comment