আজ ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চন্দনাইশে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুক্তিযোদ্ধা কে এম শেহাবুদ্দীনের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত


সৈয়দ শিবলী ছাদেক কফিল:

চন্দনাইশ উপজেলার ভাষাসৈনিক আবুল কালাম আজাদ এডুকেশন সোসাইটি গ্রন্থাগারের উদ্যোগে চন্দনাইশের কৃতীসন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক রাষ্ট্রদূত কে এম শেহাবুদ্দীনের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল সোসাইটি ও গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লেখক-শিক্ষক শাহজাহান আজাদের সভাপতিত্বে ১৭এপ্রিল সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে অতিথি ছিলেন চন্দনাইশ উপজেলা এনজিও সমন্বয়ক পল্লী প্রগতি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. নুরুল হক চৌধুরী, সাংবাদিক ও ছড়াকার সৈয়দ শিবলী ছাদেক কফিল, জনতা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল অফিসার মো. নুরুল আলম ম্যানেজার, সংগঠক ও সাংবাদিক মো. আরাফাত হোসেন। বাদে আসর দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ।

সভায় বক্তারা ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭১ র বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, তাঁদের নেতৃত্বে ও পরিচালনায় দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধের ফলশ্রুতিতে তিরিশ লক্ষ শহিদের অমূল্য প্রাণ এবং দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে লাল সবুজের পতাকা ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র অর্জন সম্ভব হয়েছে।

১৯৭১ এ মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার আগে ৬ এপ্রিল তারিখে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে অনাগত বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন তদানীন্তন ভারতের নয়া দিল্লীস্থ পাকিস্তান দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি কে এম শেহাবুদ্দীন ও তাঁর সহযোগী প্রেস আ্যটাচে আমজাদুল হক। ২৫ শে মার্চের কালরাত্রীতে অপারেশন সার্চলাইটের নামে নিরস্ত্র বাঙালী নিধন, নির্মম গণহত্যা ও অত্যাচারের প্রতিবাদে দেশপ্রেমিক কূটনীতিক কে এম শেহাবুদ্দীন তাঁর নিজ, দুই শিশু কন্যা ও স্ত্রীর জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা না করে ভয়ংকর ঝুঁকি নিয়ে এহেন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মিশন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য অবদান রেখেছেন। তিনি বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী মিশনে কূটনীতিকের কাজ করেছেন।সর্বশেষ আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ২০০১ সনে অবসরগ্রহণ করেন।

তাঁর লেখা আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ “Back and There Again – A Diplomate’s Tale” বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক একটি অনন্য দলিল। অনন্য সাহসী দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত কে এম শেহাবুদ্দীন ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

১৬ এপ্রিল ঢাকার গুলশান আজাদ মসজিদে এবং ১৭ এপ্রিল চন্দনাইশস্থ তাঁর নিজগ্রামে মোহাম্মদপুরে নামাজে যানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়।

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৬ সনে কে এম শেহাবুদ্দীনকে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর