আজ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: সাতকানিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি

সাতকানিয়া পৌরসভায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ৪০ হাজার ঘরবাড়ির ক্ষতি


ছবি: সাতকানিয়া বন্যা পরিস্থিতি

চাটগাঁর সংবাদ ডেস্কঃ চলমান বন্যায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নজিরবিহীন বন্যার কারণে এ উপজেলার মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে দিনানিপাত করছে। সড়ক ভেঙ্গে গেছে, বাড়িঘর ভেসে গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মন্দিরের ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো উপজেলা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভাসহ উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের অধিকাংশ স্থান পানির নীচে তলিয়ে গেছে। ডলু নদীর পানি বিপদসীমার ৫ থেকে ৬ ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে গিয়ে পানির স্রোতে ভেসে বেশ কয়েকজন মৃত্যুবরণ করেছেন। এরই মধ্যে ১২০ জনের সেনাবাহিনীর একটি দল উপজেলায় উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও কাজ করছে।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘এবারের বন্যার মত ভয়াবহতা অতীতে কোনোকালে দেখিনি। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করতে পেরেছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চলে যেতে পারি নাই। ধারণা করছি পৌরসভাতেই প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন এবং ৪০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।’

ছবি: সাতকানিয়া বন্যা পরিস্থিতি

সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে, ডলু নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে গেছে। পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ নম্বর গলির মুখ, কালা মসজিদের মুখ, সেগুন বাগিচার পাশে উকিল পাড়ার মুখে নদীর পাড়, ছড়ার কুলে সোনাকানিয়া খালের পাড় ভাঙ্গনের ফলে পানির স্রোতে ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডেও একই পরিস্থিতির কারণে সব বাড়িঘর পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাতকানিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নবাব রকিব চৌধুরী বলেন, ‘অতীতে কোনো সময় এরকম পানি বা বন্যা দেখি নাই। ঘরবাড়ি, পুকুর সব ডুবে একাকার হয়ে গ্রামকে এখন সমুদ্রের মতো দেখাচ্ছে।’

আমিলাইশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নটি পুরাটাই এখন পানির নীচে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। গ্রামের গবাদি পশু, মাছের প্রজেক্টসহ স্থানীয় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবাই আল্লাহকে ডাকতেছি এই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যে।’

এছাড়া সাতকানিয়া সদর, সোনাকানিয়া, চরতি, কালিয়াইশ, নলুয়া, পুরানগড়, কেওচিয়া, এওচিয়া, উত্তর ঢেমশা, দক্ষিণ ঢেমশা, ছদাহা, মাদার্শা, কাঞ্চনাসহ প্রায় সব ইউনিয়নের গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

বিপন্ন মানুষকে উদ্ধারের জন্য উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের। তিনি বলেন, ‘উদ্ধার ও ত্রাণ কর্মকাণ্ডে যার যা সামর্থ আছে তা নিয়ে প্রতিবেশিকে সাহায্য করুন। আমি এখানকার
বিত্তবান মানুষ ও সরকারি সংস্থা গুলোকে অনুরোধ জানাচ্ছি তারা যেনো সাতকানিয়ার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সহযোগীতায় এগিয়ে আসে।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর