আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়েছে, যা এরইমধ্যে তার অস্থিতে ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার এক বিবৃতিতে তার দপ্তর বিষয়টি জানায়।
৮২ বছর বয়সী বাইডেন গত সপ্তাহে প্রস্রাবজনিত জটিলতার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং শুক্রবার তার ক্যানসার শনাক্ত হয়। খবর বিবিসির।
বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যানসার বেশ মারাত্মক ধরনের। এক্ষেত্রে গ্লিসন স্কোর ১০ এর মধ্যে ৯। প্রোস্টেট ক্যান্সার কতটা ভয়াবহ এবং কত দ্রুত ছড়াতে পারে, তা পরিমাপ করা হয় এই স্কোর দিয়ে।
এর অর্থ হলো বাইডেনের অসুস্থতা বেশ গুরুতর। এই ক্যানসার শরীরে বেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানায় ক্যানসার রিসার্চ ইউকে।
বাইডেন ও তার পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার বিভিন্ন বিকল্প পথ খুঁজছেন বলে জানা গেছে। সাবেক প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানায়, ক্যানসারটি হরমোন-সংবেদনশীল, অর্থাৎ এটি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
শারীরিক অসুস্থতা ও বার্ধক্যের কারণে বাইডেন গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন।
ডেমোক্রেট প্রার্থী বাইডেন গত বছরের জুনে এক টেলিভিশন বিতর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পেরে ওঠেননি। এ কারণে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এরপর তাকে সরিয়ে কমলা হ্যারিসকে প্রার্থী করা হয়।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানায়, পুরুষদের মধ্যে ত্বকের ক্যানসারের পরে প্রোস্টেট ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) বলছে, প্রতি ১০০ জন পুরুষের মধ্যে ১৩ জনের জীবনের কোনো না কোনো সময় প্রোস্টেট ক্যানসার হয়।
এক্ষেত্রে সিডিসি বলছে, এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বার্ধক্যই সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ।
সাবেক প্রেসিডেন্টের ক্যানসার ধরা পড়ার খবরে দুই দলের সমর্থকেরাই তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর থেকে বেশিরভাগ সময় আড়ালেই ছিলেন।
গত এপ্রিল মাসে তিনি শিকাগোতে অনুষ্ঠিত এক কনফারেন্সে ভাষণ দেন। পরে মে মাসে বাইডেন বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর এটি ছিল তার প্রথম সাক্ষাৎকার। সেখানে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে না অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত তার জন্য খুবই কঠিন ছিল।
গত কয়েক মাসে বাইডেনের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। চলতি মে মাসেই ‘দ্য ভিউ’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি তিনি স্পষ্ট করে বলেন, হোয়াইট হাউসে শেষ দিকে তার স্মৃতিশক্তি বা মানসিক ক্ষমতা কমে যাওয়ার কোনো সত্যতা নেই। তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো প্রমাণ নেই।
অনেক বছর ধরেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্যানসার গবেষণার জন্য কাজ করে আসছেন। ২০২২ সালে তিনি ও তার স্ত্রী ‘ক্যান্সার মুনশট’ নামক উদ্যোগটি পুনরায় চালু করেন। এর লক্ষ্য ২০৪৭ সালের মধ্যে চার মিলিয়নের বেশি মানুষকে ক্যানসার থেকে বাঁচাতে গবেষণা ত্বরান্বিত করা।
২০১৫ সালে বাইডেন তার বড় ছেলেকে হারান। তার বড় ছেলে ব্রেইন ক্যানসারে মারা গিয়েছিলেন।