আইন আদালতকভার

যে কারণে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নতুন আলোচনায় দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার নাম। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ঘোষণা দিয়েছেন—তিনি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে ঝিনাইদহ-১ আসনে ভোট করবেন।

বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

‘আমি অ্যাটর্নি জেনারেল আছি, কিন্তু ভোট করব’

সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন,

“আমি ভোট করব। আমি নমিনেশন চেয়েছি। আমি এখনো অ্যাটর্নি জেনারেল আছি, তবে পদ ছেড়ে ভোট করব। সময় হলে দায়িত্ব ছাড়ব।”

তার এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে থাকা অবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তিনি।

‘আমার পর কে?’—প্রশ্নে কূটনৈতিক জবাব

যখন সাংবাদিকরা জানতে চান, তার পদত্যাগের পর নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাকে দেখা যেতে পারে, তখন আসাদুজ্জামান সংক্ষিপ্তভাবে বলেন,

“বাংলাদেশ যাকে মনে করে।”
তার এই সংযত উত্তর রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নতুন জল্পনা তৈরি করেছে—তিনি কি কোনো রাজনৈতিক দল থেকেই প্রার্থী হতে যাচ্ছেন, নাকি নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে নামবেন?

পেশাজীবী থেকে রাজনীতিক

গত বছরের ৮ আগস্ট মো. আসাদুজ্জামান সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন। এর আগে তিনি বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার এই রাজনৈতিক অতীত ও বর্তমান সাংবিধানিক পদ—দুইয়ের সংযোগ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

আইনি ও নৈতিক প্রশ্ন

সংবিধান অনুযায়ী, অ্যাটর্নি জেনারেল প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং তিনি সরকারের আইনগত প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
ফলে তার নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছে—একই সময়ে তিনি কতদিন পর্যন্ত পদে থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারেন?
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, পদত্যাগের পর ভোটে অংশ নেওয়ায় কোনো সাংবিধানিক বাধা নেই, তবে নির্বাচনী আচরণবিধি ও নৈতিকতার দিক থেকে এটি সংবেদনশীল একটি বিষয়।

রাজনৈতিক বার্তা নাকি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত?

আসাদুজ্জামানের এই ঘোষণা অনেকের কাছে রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে ধরা পড়েছে। কেউ মনে করছেন, তিনি রাজনীতির মূলধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছেন; আবার কেউ বলছেন, এটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, যার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব নেই।
ঝিনাইদহ-১ আসনে তার প্রার্থীতা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত না হলেও স্থানীয় পর্যায়ে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা নিঃসন্দেহে এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ।
এটি যেমন রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আগ্রহ সৃষ্টি করেছে, তেমনি সামনে আসতে পারে আইনি ব্যাখ্যা ও নৈতিক প্রশ্নের ঝড়ও।
এখন সবার দৃষ্টি—কবে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।

বাংলাদেশের খবর/ চাটগাঁর সংবাদ/ সিটিজিনিউজ/চট্টগ্রাম প্রতিদিন


Related posts

নাইক্ষংছড়ি ও রামু উপজেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে ডাকাত শাহীন

Md Maruf

কেরানীহাট নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির অন্তর্বর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন

Md Maruf

সেনবাগে বিপুল পরিমাণ মাদক সহ স্বামী স্ত্রী আটক

Md Maruf

Leave a Comment