আবদুর রাজ্জাক,জেলা প্রতিনিধি,কক্সবাজার।। কক্সবাজারের মহেশখালীর কুতুবজোমে সওকতুল ইসলাম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ শিক্ষককে হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১২ মে) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ শেষে মসজিদের বারান্দায় দাঁড়ানো অবস্থায় তার ওপর হামলা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের খোন্দকার পাড়ায়। আহত সওকতুল ইসলামের ছেলে তাহমিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় শাহাদত নামের এক ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালায়। তাহমিদের দাবি, তিনি জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। এরপর থেকেই শাহাদত তাদের পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছিল। কারণ, শাহাদত আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতাকর্মীর ইন্ধনে তিনি এই প্রতিশোধমূলক হামলা চালান। তাহমিদ আরও বলেন, “তিন মাস আগেও আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছিল। তখন ইউএনও ও ওসি এসে বিষয়টি মীমাংসা করেন। এবার আমার বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে।”সওকতুল ইসলামের ভাই আমিনুল ইসলাম বলেন, “মসজিদ থেকে বের হয়ে ভাই বারান্দায় দাঁড়াতেই শাহাদত ও তার লোকজন হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, সেখান থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।”চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে, সওকতুল ইসলামের মাথা ও পায়ে গুরুতর আঘাত রয়েছে এবং মারধরের ফলে রক্তক্ষরণ হয়েছে।স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “ঘটনাটা খুবই দুঃখজনক। মসজিদের ভেতরে এভাবে কেউ হামলা করবে, ভাবতেই পারছি না। জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত শাহাদত একসময় মহেশখালী কলেজের দফতরি ছিলেন। পরে তিনি স্থানীয় এমপি আশেক উল্লাহ রফিকের ঘনিষ্ঠ হয়ে বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। একইভাবে মন্ত্রী ও অন্য সংসদ সদস্যদের আস্থাও অর্জন করেন। তাদের একাধিক অবৈধ ব্যবসা দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন শাহাদত। অল্প সময়ের মধ্যে দফতরি থেকে ‘কোটিপতি শাহাদত’ নামে পরিচিতি পান। এরপর অর্থ ও প্রভাবের জোরে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ কাইছার হামিদ বলেন, “ঘটনার পর রেজাউল করিম নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে পুলিশ মাঠে আছে। দ্রুত সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।”
Leave a Reply