আজ ৪ঠা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ


 

গত ১ ও ২ জুলাই ২০২৫ তারিখে দৈনিক আজাদী, দৈনিক পূর্বকোণ, দৈনিক সকালের সময় পত্রিকা এবং বাংলাধারা ডটকম ও জয়নিউজবিডি ডটকম অনলাইন পোর্টালে “সাতকানিয়ায় বিয়ের প্রলোভনে কিশোরী ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার” শিরোনামে আমার ছেলে শহিদুল ইসলাম শিহাবের ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনগুলো আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমি, শহিদুল ইসলাম শিহাবের মা নার্গিস সুলতানা, এই প্রতিবেদনগুলোর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। প্রতিবেদনগুলোতে যে তথ্যগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো সঠিক নয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে শহিদুল ইসলাম শিহাব (১৯) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছেন থানা পুলিশ। রোববার (৩০ জুন) রাতে শিহাবের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।” এ বিষয়টি অসত্য। প্রথমত, আমার ছেলে শহিদুল ইসলাম শিহাবকে যুবক বলা হলেও সে ১৭ বছরের একজন কিশোর। তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলা হলেও মূলত ২৯ জুন রাত ৯টার দিকে কয়েকজন বখাটে ছেলে মৌলভীর দোকান এলাকা থেকে আমার ছেলেকে মারধর করে তার ব্যবহৃত মোবাইল ও টাকা ছিনতাই করে নেয়। পরে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে মোবাইল ও টাকা ফেরত চাইলে তারা মোবাইল ও টাকা ফেরত দেবে বলে আমার ছেলে শিহাবকে কালিয়াইশ মৌলভীর দোকানের মদিনা হোটেলে ডেকে নিয়ে যায়, যার ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। কিন্তু আমার ছেলের ব্যবহৃত মোবাইল ও টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য বখাটে ছেলেরা আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ঘটনাকে ভিন্ন দিকে নিতে চায়। পরে আমার ছেলেকে উদ্ধারের জন্য সাতকানিয়া থানায় কল দিলে পুলিশ রাত ৪টার দিকে মৌলভীর দোকানের মদিনা হোটেলে আসে। কিন্তু পুলিশ আমাদের অভিযোগ না শুনে বানোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে আমার ছেলেকে থানায় নিয়ে যায়। পরে পারভীন আক্তার নামে একজন মহিলা বাদী হয়ে তার মেয়ে তাহি আখতার নোভাকে ধর্ষণ করেছে উল্লেখ করে একটি মিথ্যা এজাহার দায়ের করলে পুলিশ মামলা আমলে নিয়ে আমার ছেলেকে পরদিন আদালতে পাঠায়। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন আছে। পুলিশ ও সাংবাদিক ভাই/বোনেরা সঠিকভাবে তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে ইনশা-আল্লাহ।

মামলার এজাহার সূত্রে প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, “প্রেমের সূত্রে উভয়েই পার্বত্য জেলা বান্দরবান শহরসহ বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যেত। সেখানে শহিদুল শারীরিক সম্পর্কে জড়িত হতে চাইলে কিশোরী প্রথমে বাধা দেয়। তবে পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীর বাবার বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাকে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হতো। সর্বশেষ রোববার (২৯ জুন) ওই কিশোরীর মা-সহ পরিবারের সকল সদস্য নানার বাড়িতে বেড়াতে গেলে রাতে সুযোগ বুঝে শিহাব কিশোরীর ঘরে ঢুকে পূর্বের ন্যায় শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। পরে কিশোরী তাকে প্রলোভন না করে বিয়ের জন্য চাপ দিলে শিহাব বিয়ে করবে না বলে ঘর ত্যাগ করে চলে যায়।” — এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার কিশোর ছেলে শিহাব একজন নিরীহ প্রকৃতির ছেলে, যা এলাকাবাসী সবাই জানে। সে কখনোই তাহি আখতার নোভা নামের ওই মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেনি। ২৯ জুন রাতেও সে ওই মেয়ের বাড়িতে ঢুকে কোনো ধরনের শারীরিক সম্পর্ক করেনি। ওসিসি রিপোর্ট ও ডিএনএ টেস্ট করলে সেটি প্রমাণিত হয়ে যাবে। আমার ছেলেকে মোবাইল ও টাকা ফেরত দেবে বলে ডেকে নিয়ে তাহি আখতার নোভার মা পারভীন আক্তার, মেয়ের বাবা নওশা মিয়া, মেয়ের মামা আব্দুল মোমেন,আব্দুল মান্নান এবং মোবাইল ও টাকা ছিনতাইকারী বখাটে ছেলে হৃদয় হোসেন বাবু, জোনাইদ, রাফি, রিয়াদ, দেলোয়ার, ইউসুফ ও কামাল গং মিলে তাহি আখতার নোভা নামের মেয়েকে আমার ১৭ বছরের কিশোর ছেলের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিতে চেয়েছে। তারা কাজীও নিয়ে আসে। কিন্তু আমার ছেলে ও আমরা রাজি না হওয়ায় মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাদী পারভীন আক্তার তার বক্তব্যে বলেছেন যে, “আমার মেয়ের সঙ্গে শিহাব প্রথমে সম্পর্ক, পরে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এখন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।” যা একেবারেই মিথ্যা কথা। মূলত, তিনি তার মেয়েকে সুকৌশলে আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু এতে ব্যর্থ হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ভুল বুঝিয়ে মনগড়া মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে এমন সংবাদ করিয়েছেন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বাদী পক্ষের বক্তব্য নেওয়া হলেও আমাদের কোনো মন্তব্য নেওয়া হয়নি, যা সাংবাদিকতার পরিপন্থী। সুতরাং এমন একপাক্ষিক সংবাদ আমরা কেউই কামনা করি না। অতএব সঠিক তথ্য-প্রমাণের আলোকে প্রকৃত ঘটনা উল্লেখ না করে এমন সংবাদ প্রচার করায় আমার ছেলে ও আমাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি অনুরোধ, যেকোনো সংবাদ প্রচারের আগে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে সংবাদ প্রচার করবেন। সেইসাথে এই ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনের অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রতিবাদকারী
নার্গিস সুলতানা
শহিদুল ইসলাম শিহাবের মা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর