আজ ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বাকলিয়ায় বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৮


নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামে মধ্যরাতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বাকলিয়া এলাকা। সংঘর্ষ ও গুলি বিনিময় ঘটনায় প্রাণ গেছে এক ছাত্রদল কর্মীর, আহত হয়েছে আরো অন্তত ১৮ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় চসিক মেয়রের ছবি দিয়ে টাঙানো ব্যানারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে মো. সাজ্জাদ (২৬) নামের এক ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবিযুক্ত একটি ব্যানার সরানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই মো. সাজ্জাদ নামে  একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং কয়েকজন আহত হন।

মিনহাজুল ইসলাম নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মধ্যরাতে হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে দেখি কয়েকজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশিক বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক যুবককে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার বুকে গুলির আঘাত ছিল। এছাড়াও এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ আরও আটজনকে চমেকে ভর্তি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিএম সালাউদ্দিন আসাদ বলেন, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা যুবদলের পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করছে। মেয়রের ছবি লাগিয়ে তারা ব্যানার পোস্টার ঝুলিয়েছিল। মেয়রের লোকেরা তা খোলার নির্দেশ দিলে আমাদের ছেলেরা ব্যানার খুলতে যায়। তখন তাদের তুলে নিয়ে মারধর করা হয়। পরে উদ্ধার করতে গেলে ভবনের ছাদ থেকে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়। এতে সাজ্জাদ মারা যায়।

যুবদল নেতা এমদাদুল বাদশা বলেন, অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তারা এত অস্ত্র কোথা থেকে পেয়েছে? তাদের অস্ত্র উদ্ধার করা হোক। গুলি করার আগে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। তারা বিএনপির কেউ নয়; আগে যুবলীগ করত। ৫ আগস্টের পর যুবদলের নাম ব্যবহার করে নানা অপকর্ম করছে। এখানকার মীর হেলাল গ্রুপের কেউ ছিল না, সব মিথ্যা কথা। নিহত সাজ্জাদ ছাত্রদলের কর্মী ছিল।

তিনি আরও বলেন, সোহান, বোরহান, হীরণ, ডাকাত বাদশা— এরা গুলি করেছে। তারা মাদকাসক্ত। এটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। যারা করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। ওসি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, রাতের মধ্যেই আসামিদের গ্রেফতার করবে বলেছেন।

নিহত সাজ্জাদের বাবা মো. আলম বলেন, আমার ছেলেকে তার বন্ধুরা ফোন করে ডেকে নিয়ে গেছে। কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছে জানি না। আমি চাই আমার ছেলে হত্যার বিচার।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বলেন, ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গেছে। গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। আহত আছেন বেশ কয়েকজন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর