নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানার আন্দরকিল্লা এলাকায় মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন নামে এক সাংবাদিককে ডেকে এনে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে এই হামলা—অভিযোগ ভুক্তভোগী সংবাদকর্মীর।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার বেলাল উদ্দিন চট্টগ্রামের নিউজপোর্টাল একুশে পত্রিকার বাঁশখালী প্রতিনিধি।
অভিযুক্তরা হলেন—বাঁশখালী উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, মোহাম্মদ নুরুন্নবী এবং নিজাম উদ্দিন। আরও একাধিক হামলাকারী থাকলেও তাদের শনাক্ত করতে পারেননি ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক। তারা সকলেই বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও ছনুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সাংবাদিক বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘নিজাম উদ্দিন আমাকে ফোন করে বলে, তৈলারদ্বীপ সেতু কেন টোলমুক্ত হচ্ছে না—সেটা নিয়ে নিউজ করা দরকার। আমি আপনাকে কিছু তথ্য দেব, আপনি আন্দরকিল্লা আসুন। তার কথা অনুযায়ী আমি সেখানে পৌঁছানো মাত্রই আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এটা শতভাগ পূর্বপরিকল্পিত হামলা। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’
এর আগে, ৪ জুলাই বাঁশখালীর কুতুবদিয়া চ্যানেলে অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে বেলাল উদ্দিনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে কোস্ট গার্ডের অভিযানে দুটি ড্রেজার জব্দ, ৪ লাখ টাকা জরিমানা এবং এক মাঝিকে কারাদণ্ড দেওয়ার তথ্য ছিল। সংবাদের একাংশে বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও ছনুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক চৌধুরীর মালিকানাধীন ড্রেজারের কথা উল্লেখ ছিল।
হামলার সময় দুর্বৃত্তরা এই সংবাদের কথা উল্লেখ করে জানিয়ে সাংবাদিক বেলাল বলেন, ‘রেজাউল হক চৌধুরীর নাম নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে আমাকে। হামলায় অভিযুক্ত হিসেবে বাঁশখালী উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন এবং রেজাউল হক চৌধুরীর অনুসারী মোহাম্মদ নুরুন্নবীকে শনাক্ত করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘হামলার সময় রেজাউল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে কেন রিপোর্ট করেছি তা জিজ্ঞেস করা হয়। এরপর তারা বলে, তোকে মেরেই ফেলবো৷ তোর মতো একজন সাংবাদিককে মেরে ফেললে কী হবে?’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ নুরুন্নবী বলেন, ‘বেলাল হচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসর, এই কারণে তাকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সে পালিয়ে গেছে। তাকে পাবলিক মেরেছে।’
জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, ‘ভুক্তভোগী সাংবাদিক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে থানায় এসেছেন। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।’